প্রতিদিন খুঁজে যাই, প্রতিক্ষণ, নিভৃত একান্তে!
খুঁজে যাই তোমাকে এ জীবনের সাধনায়;
স্বপনে-শয়নে খুঁজি, জাগরণে, খুঁজি ধারণার মাঝে।
স্নিগ্ধ প্রভাতের মোলায়েম আলোর ভেতরে,
বিচিত্র সন্ধ্যার মুগ্ধকর রঙিন আবিরে খুঁজি,
উড়নচণ্ডী বৈশাখের কালো মেঘের আড়ালে খুঁজি,
শরতের সাদা মেঘের স্নিগ্ধতার ভিড়ে খুঁজি তোমায়।
খুঁজি ফুলের কুঁড়িতে, মৌমাছির গুঞ্জরণে,
ভ্রমরের কোলাহলে, প্রজাপতির বর্ণীল পাখায়,
চৈত্রের রৌদ্রময় দুপুরের ঘুঘুদের গানে।
শীতের ঠাণ্ডায়, কুয়াশার ভিড়ে, শিশিরস্নাত
পিচ্ছিল পথে, তোমাকে খুঁজে যাই-
পরিযায়ী পাখিদের মোলায়েম পালকের ওমে।
প্রতিদিন খুঁজি তোমায়, চলমান জলবতী নদীর কুলে,
স্রোতের ফল্গুধারায়, ঢেউয়ের দোলায়,
ভাটিয়ালী সুরধ্বনী সঙ্গীতের মাঝে।
খুঁজি নিস্তব্ধ বনের ঝরা পাতার মর্মরে,
বাতাসের মোহমুগ্ধ সুবাসিত বনের ছায়ায়,
উদাসী চোখের বিরামহীন উৎকণ্ঠায়,
সীমাহীন আকাশের বিশালতায়, চন্দ্র-তারকায়;
মিটিমিটি জ্বলে থাকা দূরবর্তী নীহারিকা-দেশে।
সমুদ্র সৈকতে খুঁজি,
অন্তরবেদনা-ভরা সশব্দ উত্তাল উর্মির দোলায় খুঁজি,
বিস্তৃত বেলাভূমিতে তোমাকেই খুঁজে যাই।
জলের ক্রন্দনে খুঁজি, বাতাসের দীর্ঘশ্বাসে খুঁজি,
গভীর উৎকণ্ঠার সূক্ষ্মতর বেদনায় মাঝে;
ক্ষীণ আশা-আকাঙ্ক্ষার সূত্র ধরে আবেগের মোহনায়
তোমাকে খুঁজে যাই,
অকুল প্রেমের দরিয়ার মাঝে পরম আশাতে তরণী ভাসাই।
চাওয়া পাওয়ার দ্বিধাদ্বন্দ্বের সবকিছু বিসর্জন দিয়ে,
শুধু তোমাকেই চাই বাস্তবের এ কাঠগড়ায়।
তুমি বাঁচার ধমনী, আবেগীত শব্দের ফুল্লধ্বনির সুর,
চির-চাওয়া প্রেম, বিষন্ন প্রাণের অমরতা, প্রেমের কবিতা।
ঈশ্বরের অনন্ত রাগের মোহনীয় রাগ,
দূর থেকে কাছে এসে ঢেকে দাও মমতায়,
বেদনায় জর্জরিত, শোকাহত কবির অন্তরপুর।


১১/১২/২০১৯
মিরপুর, ঢাকা।