সকল ভাবনা তুলে রাখি আজ,
এই জীবনের সব কারুকাজ,
অকালে নামিয়া আসে কিরে সাঁঝ?
            আঁধার নামিল ধীরে।
বসে রহি একা দূর পানে চাহি,
কুঞ্জবনেতে পাখি যায় গাহি,
বিরহের গীতে যাই অবগাহি
            জীবন নদীর তীরে।


আকাশে উদিল শত শত তারা,
উল্কা ঝরিছে বন্ধন হারা,
ভাবিতেছি বসি’ এসেছিলো কারা
            সুন্দর ধরাতলে?
ধরণীর মাঝে তুলিয়া নিনাদ
করিয়া এসেছি কত প্রতিবাদ,
সকল ছাপিয়া এলো অবসাদ
            তাঁহারে পাইনি বলে।


ভোগের আশায় কত হানাহানি,
কত যে মৃত্যু, কত রাহাজানি,
সকল হারাবে একদিন জানি-
            যাইবে সকল সরে।
এ সকল কথা সকল ভুলিয়া,
মিথ্যাকে সদা এনেছি তুলিয়া,
আলোতে এ প্রাণ ধরিনি খুলিয়া
            লোভের মোহেতে পড়ে।


ভাবছি এখন সাঁঝের বেলায়,
কেটেছে জীবন অসুর খেলায়,
হবে কি মুক্তি এই অবেলায়
            ডাকলে নিরাঞ্জনে?
জল তরঙ্গ মৃদু স্বরে ধায়
চেয়ে আছি আজ বিষন্নতায়;
কোত্থেকে এলো কোথায় হারায়
            মিশবে কাহার সনে?


যৌবন জল কেমন করিয়া
জোয়ারের তোড়ে উঠিল ভরিয়া?
সময়ের টানে নিল যে হরিয়া
            সুখের স্বপ্নগুলি।
ভাবিতেছি একা বসি’ নদী কুলে,
হারায়েছি সব আসলে ও মূলে,
নিঃস্ব এখন চেতনার ভুলে
            কিবা দিবো অঞ্জলি?


শুধু রহমত কামনা তোমার,
বিশ্ব মালিক! দয়ালু অপার,
তোমার করুনা করবে যে পার
            পুল সিরাতের পুল।
আমার সকল মন্দ ও পাপ
স্মরণ করিয়া করছি বিলাপ
ক্ষমাকারী রাজ! করে দাও মাফ
            জীবনের সব ভুল।