যুদ্ধে লঙ্কা পর্যুদস্ত; রাবণ নিহত।
মন্দোদরী পাগলিনী, মাতঙ্গিনী প্রায়
মুহ্যমান, প্রিয় পুত্র ইন্দ্রজিৎ শোকে।
দুহাতে বক্ষ চেপে সে করিছে বিলাপ-
'হায়, প্রাণাধিক পুত্র! দুর্মতি পিতার
কারণে অকালে গেলে, জননীরে ছেড়ে'।


শোণিতে কর্দমময় লঙ্কা রণভূমি;
চারিদিকে অগণিত হস্তপদহীন,
মস্তকবিহীন লাশ নির্জীব, নির্জিত।
শঙ্খচক্রগদাধর অযোধ্যার রাম,
বন্ধু বিভীষণে কহে- 'স্নান সমাপনে
অঙ্গরাগে, আভরণে জনক-নন্দিনী
বৈদেহীকে আনো আজ আমার সম্মুখে;
তৃপ্ত করে নেবো যতো রণ-পরিশ্রম'।


পতিব্রতা, সাধ্বী সীতা আনত নয়নে,
উদ্বিগ্নতা নিয়ে প্রাণে, দাঁড়ায় সম্ভ্রমে।
যেনোগো স্বয়ংবরা সে, দীর্ঘ বিরহের
পর, পরদেশে। তাই, অজস্র আনন্দে
বহু কৌতূহল জাগে, সকলের মনে।
বিশালাক্ষী বিস্ফারিত সজল নয়নে
ভয়ার্ত মৃগীর ন্যায় হাজির সম্মুখে।
'তোমার মঙ্গল হোক'- রাঘব-নন্দন
কহিলেন স্নিগ্ধ স্বরে। অতঃপর, কহে-
'সীতা! তোমার চরিত্রে প্রভূত সন্দেহ!
তুমি যেনো দীপশিখা অমিত উজ্জ্বল;
চক্ষুপীড়ায় আক্রান্ত রুগীর সম্মুখে,
সে যেরূপ কষ্টকর ও পীড়াদায়ক;
সেইরূপ কষ্টকর তুমি, হে মৈথিলী!
তুমি চলে যাও দূরে, যথা ইচ্ছে হয়;
যাকে ইচ্ছে নাও তুলে, নিজ অঙ্ক 'পরে।


হায়! যুগে যুগে সীতা বিসর্জিত হয়,
তবুও, রাম থাকেন, শুদ্ধ জগৎময়।


২৬/০৪/২০১৯
মিরপুর, ঢাকা।