কাকডাকা পৌষের ভোরে সাধারণ পোষাক-পরিচ্ছদে
শীতের দাপটে কাতর মেয়েটি এলো
সব কিছু ছেড়ে একা ছেলেটির বাড়ি;
নিজের ভালোবাসার সুখ পেতে, ঘরের সন্ধানে।
চুপচাপ বসে আছে সব,
ছেলেটির বাবা এবং মা, ছোট-বড়ো ভাই,
এবং দীর্ঘদিন ধরে যিনি আছেন এই সংসারে,
সেই বৃদ্ধা মহিলাটি, যিনি ছেলেটির শিশুকাল থেকে
দেখাশোনা করে আসছে জন্মের পর থেকে;
যাকে সবাই খালা বলে ডাকে।
আকাশের নক্ষত্রের মতো লক্ষ-কোটি ভাবনারা
মিটিমিটি জ্বলে-নেভে সকলের মগজের মাঝে।
এই পিনপতন নীরবতা ভঙ্গ করে
ছেলেটির বাবা মেয়েটিকে বলে অনুচ্চারিত স্বরে-
ধন্য সাহসিকা! জগতের পঙ্কিলতা ক্ষয় হয়ে যাক।
সময়ের কাঁটা ধীরে ধীরে বয়ে যায় অনন্তের পানে-
এ কথায়, ও কথায়, আগুপিছু শত ভাবনায়;
কথা যেন বাঁধ ভাঙা আষাঢ়িয়া নদী
বয়ে চলে সম্মুখেতে দু'কুল ছাপিয়ে,
সবলে ভাসিয়ে নেয় পৃথিবীর প্রেমহীন
কুপমণ্ডুকতার আবর্জনাকে প্রবল জোয়ার বানে।
অতঃপর, ছেলেটির বাবা উঠে যায়
আনতনয়না লজ্জাকাতর সে মেয়েটিকে নিয়ে।
নিজের হাতেই তুলে দেন
মুরগী-পোলাও, লেবু ও আচার ইত্যাকার খাবার-দাবার
ঘর ছেড়ে আসা সেই মেয়েটির পাতে।
বড়ো বড়ো চোখ তুলে তাকায় মেয়েটি,
বুকের গভীর থেকে দীর্ঘশ্বাস ফেলে!
অবশেষে, ধীরে ধীরে খেতে শুরু করে।
ছেলেটি ঘন ঘন ফোন করে এখানে ওখানে;
একজন, দুইজন করে জড়ো হয় চার পাঁচ ছয়...
অতঃপর, চলে যায় তারা কাঙ্খিত স্বপ্নের খোঁজে
বিবাহ রেজিস্ট্রি কাজি-অফিসের দিকে,
সাথে ছেলেটির গর্ভধারিনীও।
ছেলেটির বাবা কিছু টাকা গুঁজে দেন স্ত্রীর হাতে
এটা ওটা প্রয়োজন হতে পারে এই ভেবে।
একেলা নিসঙ্গ ঘরে ছেলেটির বাবা বসে বসে ভাবে
এই আধুনিক কালের জীবন-যন্ত্রণার কথা।
জীবন যেখানে চলছে যেমন, তাকে তেমন চলতে দাও,
অসুখের মাঝে যতটুকু পারো মুঠি মুঠি সুখ খুঁজে নাও।


৩০/১২/২০১৯
মিরপুর, ঢাকা।