এতোকাল গত হলো, নিস্তব্ধ নীরবে;
তবুও, বারবার বেদনার ভীড়ে মনে পড়ো তুমি,
রঙিন সকালে, অলস বিকেলে, ধূসর সন্ধ্যায়,
রাতের গহীনে শিশিরের সাথে,
কর্মহীন অবসরক্ষণে, সংগোপনে।
যখন আকাশে হেসে ওঠে পূর্ণিমার নীল চাঁদ,
ঠাস বুননের আলো নেমে আসে ধীরে
পৃথিবীর পেলবিত ঘাসের উপরে;
বিস্ময়কর সে আলো! ভাবনার বন্ধ দ্বার খুলে দেয়
হাজার স্মৃতির পাণ্ডুলিপি, কতো মনোরম মেদুরতা!


উদাস দৃষ্টিতে শুধু চেয়ে থাকি জ্যোৎস্না ছড়ানো
শিরীষের পাতার সবুজে তির তির করে নামে
বালিকার ভালোবাসা, হাজার বর্ষের ঘুমন্ত আক্ষেপ।
জ্বলন্ত অগ্নির তাপে আজো মনে হয় জ্বলে যায়
দূরের অন্তরীক্ষের ঝলমল পূর্ণিমা-শর্বরী।
এই সব নিরাশার ব্যর্থতা লুকিয়ে
কতোবার, কতো ছলে চেয়েছি তোমারে,
জড়োয়ায় বৃত হয়ে স্বাধীনতাহীন জীবনের পারে।
অঢেল বিলাসিতার ব্যর্থতার ভীড়ে
মাঝে মাঝে নিজেকে হারিয়ে ফেলি।
ঘাসফুল, হলুদ শর্ষের ক্ষেত, প্রজাপতির রঙিন ডানা,
শিউলি-বকুল গন্ধ, বহতা নদীর জলে অবাধ সাঁতার,
খুঁজে পাই নাকো আর রাজসিক কারাগারে।
এখানে জন্মোচ্ছ্বাসের কোন হাসি নেই,
নেই মৃত্যুর করুণ বিলাপ,
রাখঢাক, চুপচাপ আভিজাত্যের মেকিতে মাখা সব কিছু।
শাপাক্রান্ত অহল্যার কঠিন জীবনে
আজো ভুলতে পারিনি, কবি,
মাধুরী মাখানো সেই চিরল দাঁতের প্রাণখোলা হাসি,
নিরবচ্ছিন্ন ভালোবাসার ছন্দ দোলানো কবিতা,
মেঘনার কাকচক্ষু জলের মতোন বয়ে যেত সুদূরে যা।


কখনো সখনো তোমার সংবাদ আসে,
সংসারহীন, দায়হীন জীবনে একা একা বয়ে চলো তুমি;
বিরহ-যন্ত্রণা ভার, উস্কোখুস্কো চুল,
ঐ সব সংবাদ শুনে আমি কাঁদি নীরবে, লজ্জায়, ত্রাসে।
প্রেমের কবিতা আর আসে না তোমার লেখনীর মুখে,
জগত সংসার ছেড়ে বাতাসে বাতাসে লিখে যাও
সাগর ঢেউয়ের নাচনের মতো অজস্র কবিতা,
দীঘল আক্ষেপে।
প্রেমের কারণে হয়ে গেলো তুমি
নবতর যুগে, উপাখ্যানের কায়েস!


২০/০২/২০২০
মিরপুর, ঢাকা।