মুষ্টিবদ্ধ দুই হাত উপরের দিকে উঠে আর নামে,
উত্তেজিত মিছিলে মিছিলে বৈশাখী ঝড়ের মতো-
ভোট চাই ভোট, ভোটারের মূল্যবান ভোট।
গণতন্ত্রের গর্জনে তোলপাড় তাই, ভোটের বিকল্প নাই।
এক আশ্চর্য সুন্দর ইমারত আমাদের গণতন্ত্র!
যার একেকটি ভোট- একেকটি ইট।


নদীর গতির বাঁকে বাঁকে তীব্রতর ফল্গুধারা থাকে,
সকলের অগোচরে; নদী বয়ে চলে শান্ত ধীরস্থির,
কখনোবা জলোচ্ছ্বাস, কখনো অধীর।
ভোটারের ভোট যেন গণতন্ত্রের গোপন ফল্গুধারা,
প্রতিটি সন্ধিক্ষণে বাঁক ঘুরিয়ে দিতে পারে,
একটি জনপদের জনগণের কাঙ্ক্ষিত অভিমুখে।


মানব ইতিহাসের সকল কলঙ্কময় দুর্বিনীত শোষণের চাকা
বারংবার ঘুরিয়ে দিয়েছে গোপন ভোটের নীরব বিল্পবে।
মন্দের বিরুদ্ধে সত্যের এবং সুন্দরের কামনায়,
সন্ত্রাসের, অপশক্তির বিরুদ্ধে বোধের উদ্বোধনে,
ভোটারের অমিত শক্তির রায়, চুপেচুপে কাজ করে রায়।
বৃটিশ শাসনের জমিদার-মহাজনি অত্যাচারের বিরুদ্ধে,
মধ্য-কৃষকের ভোটশক্তি শোষণের ফাঁস ঢিলা করে দিয়েছিলো,
চার আনা খাজনাধারী ভোটারের দল।
অতঃপর, ভেসে গেলো জগদ্দল পাথর,
ভোটারের অমিত শক্তির জোয়ারের তোড়ে।
জমিদার গেলো, মহাজন গেলো, বৃটিশ-শোষণ অবসানে
পাকিস্তানী হার্মাদেরা চেয়েছিলো জনতার বিপরীতে,
ভোটারের অমিত শক্তিকে চিরতরে রুদ্ধ করে দিতে।
সত্তরের ভোটের তুফানে শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু হলো-
মুক্তি ও স্বাধীনতার প্রবল আত্মবিশ্বাসে
ভোটারের আমানতি ভোটে; জন্ম নিলো একটি পতাকার।


দুর্দশাগ্রস্ত জাতির অর্থনীতির কপাট খোলার জন্য,
মৌলবাদীর-ধর্মান্ধ সমাজের সংস্কারের শক্তি জোগানোর জন্য,
পশ্চাৎপদ একটি দেশের উন্নয়নের আলোকবর্তিকার জন্য,
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি চিরঞ্জীবী করার জন্য,
নির্ভেজাল গণতান্ত্রিক শক্তির অভ্যুদয়ের প্রয়োজন।


আমাদের মুক্তিযুদ্ধে শহীদের রক্তের কসম নিয়ে,
ধর্ষিত ও নির্যাতিত বীরাঙ্গনার আর্তনাদের তরঙ্গ দুলিয়ে,
ঝাঁকে ঝাঁকে নেমে এসো, অমিততেজাঃ ভোটারের দল।
জলোচ্ছ্বাসের মতোন তীব্র আলোড়নে ভাসাও এবার,
যারা বাঙালী জাতির শত্রু-
রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস এবং তাদের দোসর।
এখন মন্দের ভালো খুঁজতে যারা হয়রান,
গণতন্ত্রের উপত্যকায় অটুট বিশ্বাস নিয়ে যারা হাঁটতে চায়,
সদলবলে নেমে এসো আজ, ভোটের পবিত্র আমানত নিয়ে;
খেয়ানত করা যাবে না কখনোই তারে।
অতঃপর, গর্ব নিয়ে বলে যাও আগামীর প্রজন্মকে-
শোন হে,  এখনো ভালোবাসি শ্যামল বাংলাকে;
এখনো যে প্রেরণা জোগায় প্রাণের স্পন্দন- একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ।


দশ কোটি ভোটারের আমাদের অহংকার আছে,
চেতনায় আছে গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধ,
সংগ্রামী গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য আর আঠারো কোটি জনতা।
সন্ত্রাসীর অপতৎপরতার নির্মমতা-
পোড়া-লাশের গন্ধে ভেসে যায় বাংলাদেশের শহরে-বন্দরে গ্রামে।
ইয়ামেনি আবরাহার হস্তির বিরুদ্ধে আবাবিলের পাথরকুচির বৃষ্টি
চর্বিত তৃণের মতো করেছিলো দুর্বিনীত দুর্বৃত্তকে।
তেমনি করেই একসঙ্গে উড়ে এসো এ ভোটের যুদ্ধে
সত্যের অমিত অঙ্গীকারে সুন্দরের অন্বেষণে।


২৮/১২/২০১৮
মিরপুর, ঢাকা।