একটি পদ্ম রূপালী থালায় পান্তা ভাতের সুগন্ধ
চোখের ফাঁদে অন্ধ পেঁচা গিলে খায় চাঁদের মাংস
একটি পদ্ম জন্ম হতেই অন্ধ অভুক্ত পেটে গুলিয়ে ফেলে জ্ঞান
উলঙ্গ শিশু বক্তৃতা দেয় " দাদা ভগবান কিনবেন, ভগবান? " ফিফটি পার্সেন্ট


একটি পদ্ম রাত্রে হাঁটে শারীরিক শ্রমে জাগিয়ে তুলে ভোর
লাল শাড়িটা রক্তে ভেজা শ্বেত ঈগলের ছোবল
একটি পদ্ম ভোরের মিছিলে শ্লোগানে মুখোরিত
তৃষ্ণার্ত কাক অন্ধকারে হারায় বাতির আলো


একটি পদ্ম নখে আঁচড় কাটে, গন্ধ ছড়ায় পূর্ণিমা রাত
প্রাচীন প্রহরে খেলা করে প্রেমের অনুপাত
আকাশের বুকে বৃষ্টি উদ্ধেলিত চোখে ভাসে
জলের খামে ভাঁজ করা তার নাম
মেঘের কাব্য পাঠ করিব বুকের বালুতে
রেখে যেও তোমার নিটোল পায়ের ছাপ।


একটি পদ্ম ভাসতে ভাসতে হারিয়ে ফেলে বয়সটাকে, কেঁপে উঠে অন্ধকারে ফোটেনা বিয়ের ফুল
স্বপ্ন দেখে শাঁখা সিঁদুর, পাঁচ আঙ্গুলে দোলায় পুরুষ, অরুন্ধুতির চুল


একটি পদ্ম অফুটন্ত থাকে হৃদয়ের গহীনে
সূক্ষ্ম, অস্পষ্ট, ধূসর
পদ্ম পাতায় অবগাহন করি বিরল বৃষ্টি
রৌদ্র স্নান, আলোর স্ফূরন


একটি পদ্ম ভালোবাসায় ভিজতে ভিজতে ক্লান্ত
প্রেমিকের সমস্ত শরীর লাউয়ের ডগার মত নটনৃত্য, অমিমাংসিত


একটি পদ্ম দেবীর মত ডুবে যাচ্ছে আশ্বিনের জলে
বুকের জমিন মরু হলে ভিজবে কি চোখের জলে?
দুষ্প্রাপ্য বেদনা ফুল নারীবৃক্ষে ফোটে
আশি বছর একটি চুম্বন লুকিয়ে রেখেছি বুকে।


একটি পদ্মের মন খারাপ, চোখে অশ্রুপাত
বুকের ভেতর খেলছে সাপ থরথর সারারাত
একটি পদ্ম ভীষণ লাজুক
সারাটি জীবন এমনি হাসুক
ছুঁয়ে দিলে আগুন আগুন
ফুলের স্পর্শে জলে ফাগুন


একটি পদ্ম পুঁথি পাঠ করে ধানক্ষেতে আলে
মগজের জমিটুকু আটকা পড়ে অঘ্রানের ঘ্রাণে
একটি পদ্ম কাতর শোকে রামের চক্ষু মায়ের ভোগে
মৃত্তিকা নদীর তলে নির্জনে ঢেউ সাজে
আমি চলে যাচ্ছি একশ আটটি নীল পদ্মের খোঁজে।


কবিতা : একশ আটটি নীল পদ্মের খোঁজে
লেখক : অপূর্ব দাস