গ্রীষ্মদেশ, রাস্তায় ধুলো-বালি-ছাই-কাঁকর-পাথর
                                পথিক ঘর্মাক্ত হন হন
রাস্তার ধারে ধারে রবীন্দ্রগীতাঞ্জলিগাছ
গাছের ডালে ডালে ফুল,
শ্যাম-মহিমা পাতা, পাতায় কাঞ্চন-কিরণ
গাছের নীচে বিদ্যালয়, আলো পাঠক্রম
নদীপারে নগর
নাগরিক কোলাহল, ধোঁয়াসা দিন-দুপুরেও
উদভ্রান্ত পথিক ; ধু ধু বালির চর
                 দ্রুতি-স্ংক্রামিত যাওয়া-আসা
ছায়ায় কেউ বসে ? বসে না কেউ ।
সময় স্ংক্ষিপ্ত । বড়ো কম ।
গরম বালিতে পা পুড়ে যায় । তবু ছায়া অচ্ছুত...।।
বসে থাকে । একা । বালখিল্য কালস্ংহার কাঁচাভূত



হাতের লেখা এক কথায় বিচ্ছিরি । প্রায় অপাঠ্য ।
"সুন্দর" শব্দটি প্রায় অপাঠ্য হলেও
অনন্য মঞ্জরী-ব্যঞ্জনায় ফুটে থাকে কবিতা-গাছে
এ কথা বুঝে ছিলেন কবিতা-ভবনের বুদ্ধদেব,
                    তখন সকলে না, আর কেউ কেউ


আজ সবাই, সব্বাই বলেন, না বুঝলেও কারও কারও
                                   বোঝার ভান
এ কথা কবি-কন্যা মঞ্জুশ্রী-কথা : চিরকালীন চিত্রনাট্য ।
"মৃত্যু" শব্দটি ট্রামে কাটা পড়েও তিমিরবিজয়ী ।
ধূসর পাণ্ডুলিপি থেকে রূপসী বাঙলার পথে  নেমে আসেন
                              নাটোরের বনলতা সেন ।



শব্দে একটা "ন" এর অভাব ;
যতীন্দ্রমোহন (বাগচী, সেনগুপ্ত নন ; )
হাসতে হাসতে বললেন,
              (হাসিতে শ্রাবণের বৃষ্টি-লাঞ্ছিত সকাল)
" 'ধু' হ্রস্ব আর 'ধূ' দীর্ঘ জানি,
এ তো দ্বান্দ্বিকতা-দীর্ণ বিভাব-অনুভাব ;
বন্ধু উড়ো খৈ ! আর বধূ অত্যাগসহন ?"


ঝিম-ধরা মধ্যাহ্ন-চক্র মাড়িয়ে চলে
                নদীপারের শ্যাম অরণ্যানী ...
গাছের ছায়ায় অর্ধ-শায়িত
                    বুকে এষা চোখে অন্বেষা
                          বিস্মৃত-প্রায়  কবি অক্ষয় বড়াল ।

এ তো বিখ্যাত মাঠ !
চাষের শেষে শস্য উঠে গেছে গোলায় গোলায়
বলা যায় এ মাঠ এখন প্রান্তর ;
হাড়-কাঁপানো হিম...।


অবহেলিত গুটি গুটি
মরা খড়, দু' একজন মটর-সুঁটি
নিশি-চক্র-স্ংক্রান্ত হাওয়া, স্মরণ-জ্যোৎস্না-রঙিন ।
মাঠে এক লম্বা ঘোড়ানিম
                       আপৎকালীন আশ্রয় ঐ গাছ ;
ডালে পা ঝুলিয়ে বসে কাঁচাভূত বাড়িয়েছে লম্বা হাত
উদ্দেশ্য নক্সী-কাঁথা, যা ঢেকে রেখেছে কবর


                  হাত মুচড়ে দিলেন জসীম উদ্দীন ।



পাতার রং তো সবুজ হয় ।
                   কিরণ-উদ্ভিন্ন সকাল ।


কাঁচাভূত উদভ্রান্ত ।
শ্যামসুকান্ত পল্লীদেশ । গাছের পাতারর্ং লাল ।
নদীর ধারা তারও রঙ লাল ।
বৃষ্টি ঝলকে ঝলকে... কী ভয়ঙ্কর লাল ।


কেন ? এ তো ভারি অদ্ভুত !
এ তো বসন্তদিন না যে কিংশুক-বাহিনী...
ঊর্দ্ধমূল-অধঃশাখ ভাবনা-কাল-কুণ্ডলিনী
হঠাৎ  চোখ তুলে দেখে কাল-স্ংহার কাঁচাভূত
ছপ ছপ  নদী পার হয়ে চলেছেন
                           দু''জন উদাসীন পথিক
জন কীটস্ আর কিশোর কবি সুকান্ত ...