'ছ দ্ম বে শ' কবিতাটি পোস্ট করার ইচ্ছে আমার ছিল না । ছদ্মনামের বিড়ম্বনা-আবর্তে পড়ে করতেই হল ।  আমরা তো এক অর্থে প্রত্যেকেই ছদ্মবেশী । নাম-পরিচয় তো ধর্তব্যের মধ্যেই আসে না ।
কবিতাটি লেখা হয়েছিল প্রায় চার বছর আগে ।  মানে ঠেকায় পড়ে লিখতে হয়েছিল ।
সে যাই হোক, কবিতাটি পাঠকের কাছে কিঞ্চিৎ দুরুহ লাগতেই পারে, অস্বীকার করা যায় না  । অবশ্য ভাষাগত প্রতিবন্ধকতা কোনও প্রতিবন্ধকতাই নয় । তা ছাড়া যথার্থ অর্থে সেই প্রতিবন্ধকতা এই কবিতায় নেই । কারণ কবিতায় যেমন কথা তার ব্যবহারিক অর্থকে অতিক্রম করে ভিন্ন এক কাব্যিক বাচ্যার্থকে স্পর্শ করে ও পাঠ্ককে এক ভিন্নতর অনুভবে আশ্লিষ্ট করে, এই কবিতায় সেই রহস্যময়তা নেই । সেই দিক থেকে ধরলে এ এক সাদা-মাটা কবিতা । ব্যবহৃত শব্দগুলি প্রচলিত অর্থকেই নির্দেশ করছে ।
   এর ভাব-গ্রহণে প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে অনুষঙ্গ ।
  কবিতাটিতে ভারতবর্ষ ছাড়াও আরো অন্তত আট' দশটি দেশের মিথোলজিক্যাল রেফারেন্স টানা হয়েছে ।
১)   ভাইকিং যুগ (রোমান মিথোলজি )
২)   স্কেণ্ডেনেভিয়ান  মিথোলজি
৩)   জিউস  মিথোলজি
৪)   গ্রীক মিথোলজি
৫)   মায়া  মিথোলজি
৬)   মেক্সিকান  মিথোলজি
৭)   ক্রিশ্চিয়ান  মিথোলজি
৮)   সুমেরীয়  মিথোলজি


ভারতীয় পুরাণ, উপ পুরাণ, বেদ, রামায়ণ, মহাভারত, লোক-প্রবাদ, কিংবদন্তী ইত্যাদি থেকেও উপাদান স্ংগৃহীত হয়েছে ।
বাইবেলের (ওল্ড ও নিয়ু ) দু'ই টেস্টামেন্ট থেকে নানা অনুষঙ্গ কবিতায় এসেছে ।
মূলত লিঙ্গ-পুরাণ, মাওর্ণ্ডেয় পুরাণ, বামনপুরাণ, পদ্মপুরাণ থেকে নানা ছদ্মবেশ সংক্রান্ত রেফারেন্স টানা হয়েছে ।


অতি সংক্ষেপে কবিতার ভাবার্থঃ (কবিতার অতিরঞ্জনী বিশ্লেষণে আমার বিশ্বাস নেই ক্ষমতাও নেই । যে রান্না করে সে চেখে চেখে বলে দেয় না রান্না কেমন  হয়েছে । কথাটা খাদ্য-রসিকের বলার কথা ।


কবিতার মূল বিষয়-বস্তুর ধারণামাত্র । নীচে :-


"ছ দ্ম বে শ" শিরোনামের মধ্যেই কবিতার মৌলিক অর্থ নিহিত ।


রূপ, স্বরূপ, ব্যঞ্জনা প্রকৃতির চরম সত্য । কিন্তু এই সত্যের বীজ ও ব্যাপ্তি এখনও মানুষ নামের অকিঞ্চিৎকর প্রাণীর বৌদ্ধিক দর্পণে ধারণ-যোগ্য মনে হয়,  হয়ে ওঠেনি । ব্যাপ্তি ও বিকাশের মহাবৈশ্বিক রূপ  ইন্দ্রিয় গ্রাহ্য আজও নয় । মানে মানুষের লব্ধ জ্ঞানবৃত্তাধীন নয় । যৎকিঞ্চিৎ প্রতিবিম্বিত ।
স্বরূপ উপলব্ধির কথা বলা হয় ।
রূপ দর্শনযোগ্য । উপলব্ধির বিষয় নয় ।
রূপ প্রতিভাত হয় ।
বহিরাঙ্গিক প্রদর্শনী আপাতদৃষ্টিতে যথেষ্ট মনে হলেও দর্শনে ফাঁক ও ফাঁকি থেকেই যায় ।
প্রদর্শকের  জৈবিক বা অজৈবিক রূপান্বিত সত্তার মৌল জ্যামিতিক আকার-তত্ত্ব তাই দৃষ্টিতে বা প্রজ্ঞায়  যে স্বারূপ্যের ধারণা সৃষ্টি করে তার উন্মোচন ধারণানুগ বা দর্শানানুগ নয় । যথার্থ উন্মোচন ভিন্নধর্মী । উপলব্ধি বীজাকাঙক্ষী বন্ধ্যাশিলাক্ষেত্র,
বৃষ্টি-পতন-ধ্বনি শ্রবণমাত্র সার ।
রূপ প্রকাশের শর্ত আলো । আলোর প্রকাশ নেই । আলোকিত বস্তু দৃষ্টিগ্রাহ্য ।
আবার আলোয় যা প্রকাশিত তা কী চরম রূপ ?
অভিজ্ঞতা দিয়েই জানি আলোর বর্ণভেদে দৃশ্যমান বস্তু রূপান্তরিত হয়ে যায় । আলোয় যা প্রকাশিত তা প্রকাশ্যোগ্য এক সত্তার তারণ সঞ্চরণ ও সঞ্চারণ ।
মানুষ নিজেকেই জানে না । স্বরূপ অজ্ঞাত ।
সভ্যতা, জীবন জ্ঞানার্জনের মৌল উদ্দেশ্য আত্ম-দর্শন । স্বরূপ উপলব্ধি ।
সোহং । সোহং । সোহং ।