কতকাল পরে হঠাৎ দেখা তার সাথে
শান্ত পায়ে হাঁটছিল ফুটপাথ ধরে মানুষের ভীড়ে।
নির্লিপ্ত চোখ, দৃষ্টি বহুদূরে-আমাকে স্পর্শ করলো না।
না-কি আমায় চিনতেই পারলো না?


বয়সের ভারে ন্যুব্জ তার গ্রীবা,
চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা
শুভ্রবসনা এক প্রৌঢ়া শেষ বিকেলের আলোয়
ব্যস্ত পথের বিপরীত থেকে আমায় অতিক্রম করে গেল।


ধূসর কুন্তল, কপালে ভাঁজ বলিরেখার
যেন ক্লান্ত সৈনিক এখনি ফিরছে মাঠ থেকে যুদ্ধের।
মুখায়বে তাঁর করুণ দ্যোতনা আঁকা-অব্যক্ত রোদন মূর্ত হয়েছে চোখে
জলহারা মেঘ বর্ষণ শেষে ভেসে যায় যেন কোন দূরদেশে।


বিধাতার আঁকা রাজটীকা ছিল কোনকালে তার ভালে
মানুষ এনেছে দুঃখ ছিনিয়ে সুখটুকু পায়ে ঠেলে।
ঝঞ্ঝা-ক্ষুব্ধ বারিধিতে তাঁর ছিঁড়েছে তরীর পাল
মায়া-মরীচিকা মিছে ফেলে গেছে অধরা চোখের জল।


কত দীপ নেভে আঁধারের গ্রাসে এমন সন্ধ্যা বেলা
কী-অমোঘ টানে এই সায়াহ্নে সমুখের পথে চলা?
ক্রমে মিশে যায় সে মানুষের ভীড়ে...
আমি তাকিয়ে থাকি নিস্পলকে, তার গন্তব্যে।