মৃৃত্যু ছুড়েছে ধ্বংস বাণ !ঘরে মৃৃৃৃত্যু ! বাহিরে মৃৃৃত্যু !
বাতাসে-বাতাসে,স্পর্শে-স্পর্শে শুধুই মারণ অনু !
নিঃশ্বাস-প্রশ্বাসে মৃৃৃত্যু ! কথায়-চলায় মৃৃৃত্যু ছড়ায়
নরক থেকে উড়ে আসা সর্বত্রাসী ডাকিনী সুখ তিরোহিত ধরার পাপে !আতঙ্কে জমাট সম্পর্কগুলো
আজ পলকা বাষ্পের মত উবে গেছে নষ্ট শূন্যতায় ৷
মায়া ভুলেছে স্বার্থ নিজে ৷ সন্তান ছাড়ে জনকেরে ৷
মৃৃৃত্যুর বেদিতে শুধু বাঁচার নামে আপনের বলিদান !
নশ্বর পায় না মহাপ্রস্থানে মাটির অন্ধকারের স্বাদ !


ফেরারি হল আতঙ্কিত চোখেরা উল্টে পড়ে থাকা
নিথরের পাশ কেটে ৷ একলিপিয়াসের বিষ নাগিণ
আজ উম্মুক্ত ! এপোলোর ছোড়া তিরে যখন মহা-
প্রলয়ের সংকেত ! দেহ-মনে মরে গেছে মানবতা,পাপড়ি ঝরা মলিন গোলাপের মত ৷


চেরী ফুটা বসন্ত দেখেনা কোন সৌন্দর্য পিয়াসী ৷
সুধার নামে কাননে-কাননে কবিতা শুন্য নিষ্পাপ
পুষ্পদাম ৷ নিস্তব্ধতায় সাগর-সৈকত আজ এক অন্তরঙ্গ প্রেমলীলায় যুগলবন্দী ! সভ্যালয়ে নেমে
আসে নিসর্গের আদি-অকৃৃৃৃত্রিম সন্তানেরা ৷ সৃৃৃৃষ্টির
সেরা অন্তরীত নিশি প্যাঁচার মত গুপ্ত খোরল আবাসে ৷ সঙ্গের সাথেই যত রাজ্যের শত্রুতা ৷


ক্ষুধা কড়া নাড়ে অভূক্তের দ্বারে-দ্বারে ! জীবন হেরেছে যখন জীবিকার কাছে ৷ ঠকঠকে কম্পিত
প্রাচীন সেত এখন শীতের ঝরা পাতা ! সম্ভাবনার
দৃৃৃৃষ্টি যত রূড় বর্তমান আর অনাগত ভবিষ্যতে ৷
দিবা-নিশি আজ শুধুই মৃৃৃৃত্যুর সাক্ষী ! রঙ্গ নটের
মুখোশ খুলে গেছে ৷ জনে-জনে এখন কাপুরুষের
সুরৎ ! অস্তিত্বে-অস্তিত্বে যখন প্রয়োজনের ডাক ৷


সৃৃৃষ্টিই যদি না বাঁচে তবে দেবালয়ের মূল্য কি ?
প্যানাসিয়া এখনও প্রজ্ঞার অধরা যেন সাইরেনের
ছলনাময়ী মন ভুলানি সুর ৷ আতঙ্কে নিস্তব্ধ দশ
দিক ! সাত আসমান ফেঁড়ে নেমে আসেনা কোন
ঐশী দাওয়াই ৷ অন্ধ আবেগ উত্তরহীন প্রশ্মে দেখে
অদৃৃৃৃষ্টের আক্রোশ ৷ আত্মবিধ্বংসী অহমের হাস-ফাসের সম্বল আজ অভিশপ্ত মিডাসের মতই
ব্যর্থতায় পর্যবসিত !


সহায় পিছায় ! সম্বল পিছায় ! বাঁচার আশায়
পলায়নপর মনুর জাত !পিছনে-পিছনে শুধু দেবি
শীতলার বিষাক্ত মার্তন্ডের ঝাপটা ৷ দুহাত তুলে
সামনে এগিয়ে আসে সুচি শুভ্র ভূষণে মৃৃৃৃত্যুঞ্জয়ী
দেবদূত; সেবার বায়াত নিয়ে দেহ-মনে হিপোক্রিতাসের শপথে ৷ যে নয়ন অন্য নয়নে দেখে
জরার কষ্ট ৷ যে মন পর মনের সাথে মিশে ভয়ার্ত
লুকায়িত আত্মাকে দেয় বাঁচার সাহস ৷


মোম গলে,আলোক শিখা জ্বলে প্রাণেরও মঙ্গলে ৷
পরহিতে মহামতি করে জেনেশুনে বিষপাণ !
এক মহাপ্রাণের বিসর্জনে জাগে দিকে-দিকে প্রাণ
অগনন ৷ নুয়ে পড়া লজ্জাবতি লতা দাঁড়ায় নব আশার বিশ্বাসে!পিছনে শুধুই আরোগ্যের ফুলশয্যা ৷
সামনে পড়ে থাকে জরা যুদ্ধে রিক্ত-ক্লিষ্ট নিথর দেহে
রুগ্ন মানবতার ডাকে বিবেক ফুঁড়ে বেরিয়ে আসা মর্তের দেবদূতেরা !


আমি বলছি ৷ আমি পীড়িতের আর্তচিৎকার বলছি
উপশমের ফুলশয্যা হতে ! যেখানে দেবতা আর মাটির সৃৃৃষ্টি মিলে একাকার ৷ উঠে গেছে স্বর্গ-মর্তের
পর্দা ৷ ফিরে আসে জীবন বারে-বারে মৃৃৃত্যুর দ্বার হতে নতুন প্রাণের শত-সহস্র ফাল্গুধারায় ৷
নশ্বর ধরনীর বুক চিরে ফুটে উঠে বৃৃৃৃৃষ্টি লিলি ৷
নব আনন্দে ময়ূর নাছে পেখম খুলে,বিগত হারানো মলিন পালকের শোক ভুলে ৷


অমানিশার এক অন্ধকার কোকুন ফেটে বেরিয়ে আসে সত্য সুখের বেসাতি ছড়ানো রঙিন প্রজাপতি
স্বপ্নরা ! যারা দিবে চোখ মেলে চাওয়ার আশ্বাস পঞ্চ ইনদ্রিয় হারা অবচেতনে ৷ আনন্দের ঝিলিকে  প্রতিটি উৎকন্ঠিত বদনে খেলে যাবে যেন মঙ্গল জ্যোতি বিচ্ছুরিত নব প্রভাতের রবি ৷ যার তাপস তাপে মুছে যাবে সকল দুঃখাশ্রু ৷


(কবিতাটিতে করোনাকালের বীভৎসতা, পৃৃৃৃথিবীর পরিবর্তণ ও করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় মৃৃৃত্যুকে তুচ্ছ করে চিকিৎসকদের আত্নত্যাগ প্রসঙ্গে আলোকপাত
করা হয়েছে ৷)