"পেন্নাম করি হুজুর!", বললো যেই কিশানে,
রাজা কহেন, "কে তুমি, চিনতে না পারি হে!"
"আমার রাজ্যে কী সমস্যা আমার শাসনে?"
"দিচ্ছি তো কত কিছু, পাচ্ছো না কি সব হে?"


কিশান কহে "পাচ্ছি বটে আপনার মত করে,
ভাবছি শুধু, নিজেদের মতো কবে পাবো সব!"
"বইছে ধারা আপনার দানের, নিচ্ছি বস্তা ভরে;
দিন শেষে ওসব দিয়েই আমরা করি মোচ্ছব।"


"তাইলে বাপু চিন্তা কীসের? কী হেতু আসো"
এত কিছু দিলাম - তাতেই তো সুখ আছে।
রাজার নামে গুন গাও আর রাজ্য ভালোবাসো।
অভিযোগ কী তোমার, আমার এই কাজে?"


কিশান কহে নম্র ভাবে, "হে রাজামশাই!
দুই সের চালে কি আর প্যাট ভরা যায়?"
"বলো কী? সের দুই মোটে চাল পাও তুমি?",
ক্ষিপ্র রাজা বলেন, "এরে বন্দী করো এক্ষুনি।"


"রাজার নামে ভালো মন্দ বলবে কোথায় প্রজা,
এ যে দেখি মিথ্যে বলে, হতে চাইছে নেতা!
বছর বছর রাজকোষ খালি করে দিচ্ছি কত,
খাজনা মুকুব, খাবার জোগান দি নি কি তা?"


কিশান বলে, "খাজনা মকুব? করলেন কবে? নিচ্ছেন তো সবই!
আগেরবার যা ছিল, এবারে তার দ্বিগুণ, পরের বার হবে তাইই!"
রাজা বলেন, "একি কথা? আমার অজান্তে এ রাজ্যে অরাজকতা!"
আশ্বাস দিয়ে বলেন তারে, "দেখছি কী হচ্ছে, সমাধান হবে সমস্যাটা।"


আশ্বস্ত হয়ে কিশান, ফিরলো বাড়ি আনন্দে।
রাজা তার শুনেছেন কথা, আর কিসের চিন্তে!
রাজা বেশ ভালো মানুষ, আধপেটা আর কাটবে না।
তার উপর ভরসা করেই পেরিয়ে গেলো দিন যে।


দুদিন বাদে ঘোষণা হলো, দেশে পড়লো ঢ্যারা -
রাজার নামে রাজার কাছে নালিশ কিন্তু সেরা।
তবুও তাতে ভিজবে না চিড়ে, গলবে না তার মন!
আগে খাজনা দশ সের ধান হলে, এখন এক কাহন।


রাজার আদেশ শিরোধার্য, নয়তো যাবে তোমার গর্দান।
এসব কথা না জেনেই কিশান চেয়েছিল বরদান।
সেই কিশান পেলো ভালোই বর, রাজার লোক জ্বালালো ঘর,
বাড়লো আরো খাজনা, কমলো মানুষের খাটনির দাম।