নারীর নাড়ী ছিঁড়ে লভেছি জন্ম তবু জাত ভিন্ন
জন্মেই যেন বন্ধন করেছি ছিন্ন।
ষড়ঋপু যেন তখনই ধরেছে জাকিয়ে
নরশাবক পেয়ে পড়েছে ওরা ঝাঁপিয়ে।


বাল্যপ্রেমে জড় জড়িয়েছি কত
খেলার ছলে ভালোবেসেছি খেলনায় শত শত।
মাতৃবাক্য কবে করিব লঙ্ঘন,কবে আমার হবে অবনী
কত স্বপ্ন দেখেছি খেলার মাঠে কাটাব বিনিদ্র রজনী।


কৈশোর পেরিয়ে যৌবন যে কবে এলো
মৃদুলা বাতাসে অবয়ব এলোমেলো,
রমনীর চোখ হয়েছিল মম ভাষা
এই বুঝি কৈলাশ,এই বুঝি ভালোবাসা।


কৈলাশ হতে দ্রুত সম্বিত পেয়ে ধরায় ফিরে যাই
নাগিনী যে, বড্ড মায়াবিনী! সে আর আমার নাই।
বিরহ আদরের পুত্র,ধমনীর প্রতিটি রক্তকনায় যার বাস
এরই মাঝে হঠাৎ হৃদয় ভেদিয়া নতুন শিহরন,নতুন প্রেমের আভাস।


মনিকোঠা মোর পড়েছে নতুন ফাঁদে
কার আঁচলে চিত্ত লুকায় কেবল প্রমোদে ।
বলিহারী তার রূপ বর্নিব কেমনে, ভেবেছি সহস্র রাত
উনুন জ্বলছে জ্বলুক নেই পরোয়া পুড়ছে রাতের বেলার ভাত।


কি প্রেমে মজিয়া জ্ঞানে অজ্ঞানে তার নিয়ে শুয়ে আছি
জাগরণে পুনঃ তারে জড়ায়ে বারান্দায় বসেছি।
সমুদ্রমন্থনের সুধা পান করেছি ডুবে ডুবে তার মাঝার
রাহু-কেতু যেথা দেহ ভাঙিল, এহেন দরিদ্র সেথা অমর।


তারে ধরেছি যখন তখন কিবা দিন কিবা রাত
শতকোটিবার তার শরীরে যত্রতত্র রেখেছি হাত।
বারেক রাঙিয়ে চোখ দেয়নিক অযুহাত বেলা-অবেলা
আজ অবধি সূচাগ্রসম করেনিক অবহেলা।


তোমায় বড় ভালোবাসি কবিতা,তুমি যে মোর প্রাণ
সহস্র সূর্যোদয়ে পাশে থেকে তুমি হলে মোর ধ্যান জ্ঞান।
দুঃফোটা অশ্রুজলে অথবা এক চিলতে হাসিতে পূজেছি তোমারে কবিতা,
অমরত্ব দানে এই দীনহীনে আখ্যা দিলে গ্রহীতা।


কবিতার প্রেমে মত্ত হৃদয়,কবিতার কাছে ঋণ
নিথর আমি বদ্ধ উন্মাদ কবিতাবিহীন,
শোকের নদী বয়ে গেছে, কবিতা দিয়েছে বাঁধ
প্রিয়জন সব ছেড়ে চলে গেছে তবু কবিতার কাঁধে কাঁধ।


কোন বন্ধনে ভুবন করে সদা দিবাকর প্রদক্ষিন
ভুবনে বলিও কবিতার বন্ধন তার থেকে সুকঠিন।
যেই ভ্রমে মোরে কবি বলে ডাকো জ্ঞানী,গুনী, বিদ্বান
কারন কেবলই তার সাথে মোর হৃদয়ের আদান-প্রদান।


যদি তস্করে চুরি করে মোরে,যদি রিপু মারে বান
যদি সমনে করে স্মরণ,কখনও হারাই প্রাণ,
কবিতারে মোর রাখিও যতনে না করিও অবহেলা
তোমা সবে আজি অনুরোধ রাখি আমার যাবার বেলা।


মরণের পরও থাকিব অমর এই কবিতার মাঝে
আবার কখনো দেখা মিলবে,যাই রবির অস্ত সাঁঝে
যদি পরজনমে পাই ভৃত্যের গঠন, তুমি কবিতা হয়ো নৃপতি
সহাস্যে করিব দাসত্ববরণ,এই যে আমার শেষ আকুতি।