আজ মনে হয়
অনামিকা একদিন তুমি
রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার নীচে দাঁড়িয়ে
ব্যথিত করুণচোখে চেয়েছিলে
সমুখে বিস্তীর্ণ মাঠ
আমি পেরিয়ে এলাম
কি যে ফেলে এলাম-বুঝি নাই
বুঝেছে সময়
এক দুই তিন-গেছে দিন গেছে বছর
হঠাৎ দেখলাম
ম্লান বিকেলের বিস্বাদ চায়ের পেয়ালায়
নেমেছে দীর্ঘশ্বাস-ঘুরছে ঘুরছে
ঘূর্ণির গহ্বরে জমেছে অন্ধকার অন্ধকার-সীমাহীন শূন্যতার


আজ মনে হয়, সেদিন
দু’চোখ তোমার ভেঙ্গেছিল দ্বিপ্রহর
বহুদূর প্রাচীন শয্যা থেকে
চুলে ছিল পৃথিবী হারাবার ঘন অন্ধকার-তবুও
তবু তুমি বল নাই
কেন বল নাই!
কেন বললে না-এসো পাশাপাশি পথ হাঁটি
পৃথিবীর নির্জন পথে পথে
যে পথে তুষারের শব্দের মতো
ঝরে পড়ে ফুলেরা
চুপচাপ চুপচাপ খেলা করে
গেঁথে যায় নতুন কোন সুর কোন সঙ্গীত-বেজে ওঠে
দূর অতীতের দিগন্ত ছোঁয়া ম্লান আলোক হতে
নিঃশব্দে নতুনে বয়ে এসে
অফুরান আগামীর সোনারোদে


তবে আজ
সেই মাঠে
বিধ্বস্ত পথিকের মতো খুঁজে পেতাম কি নিজেকে আমি!
হাঁটছি হাঁটছি
সম্মুখে অন্তহীন শূন্য প্রান্তর
শেষ নাই-শেষ হয়না
হাঁটছি হাঁটছি
সেই কৃষ্ণচূড়া আছে
যদিও বয়স বেড়েছে তার
ম্লান হয়েছে কিছু রক্তিমতার
কিন্ত তুমি নেই আমি নেই-ক্ষয়ে গেছি
ক্ষয়ে গেছে পৃথিবী
জানে কি সে-জানে হয়তোবা
_________________________________


কামাল
খুলনা, ০৪ নভেম্বর ১৯৯১