দুই হাত মেলে দাঁড়িয়েছি মনের দু-পাশে
আকাশ প্রান্তদ্বয় হাতের মুঠোয়
রাত্রিকে গুটিয়ে নিয়ে ছোট করে রাখি
মুঠোর ভেতরে চাঁদ।
ঝকঝকে তারাগুলো তালুতে সাজাই
স্বপ্নের সুঁড়িপথ
যেখানে ভেসে আছে কালো ছায়া,
হেঁটে যাই ভেতরের ভেতর
জোনাকির মত তারাগুলো আলো দেয়
সাহসও-তো দেয়,
এগিয়ে যাই হাতে নিয়ে তুষার জড়ানো চাঁদ।


আমারও আকাশ ছিল নীল
বাতাসের কণা জুড়ে নরম আবেগ
সুখ-ডানা,
যখনই দিয়েছি মেলে
হাজার হাজার মাইল
ঢেউ চলে গেছে এলোচুলে,
ডানা থেকে মেঘ, তারপর বৃষ্টি হলাম.....


পুরাতাত্বিক ইতিহাসে নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে
আমার মহাকাশ বিচরণ
সন আর দিনক্ষণ,
এখনো স্মৃতি খুঁড়ে
আদিম কোন কঙ্কাল অথবা ফসিলে।
তবে, নেই যারা ভেসে আছে
ছায়া হয়ে,
তাদের গোত্র কূল অথবা দেহমাপ
ইতিহাস অথবা অবস্থান।
স্বপ্নের ভেতরে
তারা সব ধাবমান গোলক।


তারা ঝর্ণাধারার মতই চপল
রাত্রির গাঢ় বনে
রেখে যায় নতুন পালক
ভেঙে পড়া ডানায় ডানায়
আবারও উড়ে যাব পাখি হয়ে
তাদের ছোঁয়ায় এইভাবে রাতভোর
পরিযায়ী হব।


একদিন ছায়ার গোলক অশরীরী
জমায়েত হবে কোনো মাঠে
কালো ছায়া আবৃত করে
জানতে চাইবে ঠিক কতদিন, আর
কেন আমি বেঁচে আছি?
এখনো স্বপ্ন দেখি,
চাঁদ, তারা আর আকাশ
এখনো আবিষ্ট কেন করে?


কখনো গাছের পাতায় আবার
মেঘে মেঘে লুকোচুরি খেলে ওই চাঁদ
বেতনভোগী বহুরূপী
ঠিক জানে অতীতের কথা
জানে ছায়াদের জন্মবৃত্ত, আর
কিভাবে একে একে দেহগুলো ছায়া হল
তাদের গড়ে ওঠা থেকে যৌবন আর পতন,
কিভাবে আমার বাতাস ডানায় ভেসে গেছে
তাদের আদিগন্ত উপস্থিতি
আকাশের বাইরে
যেখানে মৃত তারাদের দেশ...
জানে কতদিন বেঁচেছিল, কত পথ হেঁটেছিল।


সোনালী খেতের বিবশ আলপথে
যারা সদ্য তরুণীর মত হেঁটে গেছে
সেই পথে কচিঘাস, সবুজ ছায়ার ঘ্রাণ,
লজ্জা-লাল ডুবে গেছে যারা পশ্চিমে
অন্তহীন তাদের শীতল ছায়ায়
নিদ্রামগ্ন বিশ্ব।


রক্তস্রোত-ভেজা রাজপথ
যেখানে লুটিয়ে পড়েছিল কাব্য
শোকছায়া সেখানেই জেগে আছে,
প্রজাপতির পাখার মতন রঙিন
অনুচ্চারিত – অপঠিতরা
দিন আর রাতের আশ্লেষে
কেঁদে ওঠে,
আলো দাও , একটু বাতাস দাও
নদীর মতই বয়ে যাব ক্রমশ
জ্যোৎস্নার দুধ-রাতে
আকাশটা হয়ে যাক হীরক-বিতান।


চাঁদ তুমি ভেঙে যাও
টুকরো টুকরো ছড়াও আকাশে
ছায়ারা সব দেহ ফিরে পাবে
পৃথিবী কবিতা-  


*************


** সেদিন মন খুব খারাপ ছিল - এই কবিতা তারই ফসল......  এখন ভাবি - কেন লিখেছিলাম!!
লেখাটি প্রথম ছাপা হয় " বৈতানিক" নামক একটি লিট্ল-ম্যাগ এ (২০০৩ সালে) ।