(১)
আসরে দেখেছি তাকে;
দূরে দূরে থেকে।
বৈশাখী সন্ধ্যায় এসেছিল সে,
গোধূলির লালিমার মুগ্ধতা মেখে।


শাড়ী তার জরিপাড় শ্বেতাম্বরী,
নকশাতে মেখে নিয়ে তেপান্তরের মায়া,
লেপটেছে দেহবল্লরী।


ঠোঁটের ওই লালিমায় রক্তিম লাজ,
গুলবাগে কলি বুঝি অপেক্ষাতে,
ফুটবে ওষ্ঠপুটে আজ।


খোঁপা জুড়ে বেলীফুল এঁকে কারিগরি,
মন-কেমনের দিনে সোহাগী সুবাসে,
জড়িয়েছে মায়াবী কবরী।


হাসি তার একবুক-বিষাদ ভোলায়,
দুধেল জ্যোৎস্না ঢেলে চাঁদ হাসে যেন,
মৌনী রাতের আঙিনায়।


ভুরু জুড়ে আঁকল কে অনঙ্গ পাখি?
রাঙা তুলি ছোঁয়ালো কে লাজুক গালে?
চাউনিতে আঁকল কে ভোররাত্রির ঘুম?
মেঠো সুর মাখালো কে কাজলে কাজলে?


সে রূপের ছিটেফোঁটা কুড়িয়েই সুখ,
তৃষাতুর চেয়ে থাকি তাই অপলকে,
বৈশাখী সন্ধ্যায় এসেছিল সে,
দেখেছি আসরে তাকে দূরে দূরে থেকে।


(২)
সেদিনের গান তার -
আজও কানে বাজে।
ঝিঁঝিটের সুরে ছিল জাদুকরী নেশা,
সময়টা থমকেছে মেহফিল মাঝে।


মুগ্ধতা মেখে দিল তন্দ্রালু চোখে,
হৃদয়ের ঝোড়ো হাওয়া থেমে গেছে বেমালুম,
ভেসে গেছি স্বর্গীয় লোকে।


কি জানি কী মায়া ছিল সে সুরের মীড়ে,
সুরে সুরে ছুঁয়ে দিয়ে কোমল নিষাদ,
ছুঁয়েছে সে বুকের গভীরে।


জানবেনা কোনোদিনও; জানবেনা সে,
ভরেছে এ হৃদয়ের গোপন কুঠুরি,
অজান্তে অচেনা আবেশে।


সে রূপের সে গুণের যোগ্য তো নই,
দূরে দূরে থেকে শুধু পুজো করা সাজে,
চাঁদ ছোঁব সে কপাল কই!


ইচ্ছেরা তবুও তো উস্কানি দেয়,
একগুঁয়ে প্রশ্নেরা ভিড় করে আসে-
দেখেছে কি একবারও? ভুল করে, আড়চোখে?
এঁকেছে কি আঁকিবুঁকি মন-ক্যানভাসে?


সেদিন প্রথমবার, সেদিনই তো শেষ,
তবু যদি কখনো সে আসে কথা রেখে,
সেদিনের বৈশাখী সন্ধ্যার মত,
একইভাবে দেখে যাব দূরে দূরে থেকে।


****************************
রচনাকাল : ১৫ই মে, ২০১৯