রাম হরি(প্রথম পর্ব)


চিত্রগুপ্ত খাতা খুলে বসে আছেন;
হিসেব নিকেষ চলছে নিক্তি মেপে,
রাম হরি সামনে দাঁড়িয়ে।
মাথা নত,
উঁকি মেরে কিছু একটা,
দেখার চেষ্টা করলেন।
যমরাজ বললেন রাম হরি?
জি হুজুর-
আমার কি কসুর আছে!
না, সেরকম কিছু ঘটনা নেই;
তুমি পাক্কা আদমী আছ;
বলো, এবার তুমি মর্তে কি হয়ে জন্মাতে চাও?
রাম হরি টাঁক মাথা চুলকে বলল-
আমার কোনো বাসনা নাই;
আপনার যা ইচ্ছা তাই করুন,
মহা সমস্যায় পড়লেন বিচারক।
রাম হরি যোগ বিয়োগ করে শূণ্য পেয়েছেন!
বেশি হলে স্বর্গ, কম হলে নরক;
এটাই হিসেব ছিল-
শূণ্য তো কেউ কোনো দিন পাইনি!
লোকটা করেছে কি?
ভালো ও না,
মন্দ ও না!
যমরাজ নির্দেশ দিলেন চিত্র গুপ্তকে-
হিসেবের খাতা পুনরায় বিবেচনা করা হোক।


               রাম হ(দ্বিতীয় পর্ব)


চিত্র গুপ্ত আবার শুরু করলেন;
এদিকে রাম হ দাঁড়িয়ে আছে।
পায়ে ব্যথাটা যেন বাড়ছে--,
হিসেব নিকেষ শেষ।
না কোনো ভুল নেই!
স্বর্গের নিয়ম অনুযায়ী একটি করে বর্ণ
প্রতি হিসেবে কম হচ্ছে;
এখন তার নাম রাম হ।
যমরাজ বললেন-- রাম হ?
বল, তুমি এবার জন্ম নিলে কি হতে চাও?
রাম হ বলল আমাকে দিয়ে যা করানোর--
তাই করে দিন।
যমরাজ এক ধমক দিয়ে বললেন;
স্বর্গে এসব চলে না।
হিসেবে শূণ্য হলে,
আসামীর ইচ্ছা কে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
তুমি তাড়াতাড়ি বল-
পিছনে লাইন পড়ে গেছে;
কিছু বুঝতে পারছ না?


                  রাম(তৃতীয় পর্ব)



এবার ও হল না কিছু!
আবার একটি বর্ণ খসে পড়ল স্বর্গে।
অনেক আসামী পিছনে দাঁড়িয়ে।
মৃত মানুষের জীবিত আত্মা;
বিচার চলছে ---
স্বর্গ না নরক?
কতদিন পর আবার নব জন্ম?
কিন্তু হিসেব মিলছে না।
যমরাজ অপারগ; বিচার ব্যবস্হায়।
অবশেষে স্হির হল
সিদ্ধান্ত নিতে হবে ব্রম্ভা,বিষ্ণু ও মহেশ্বর কে।
সকলে মিলে রাম কে নিয়ে চললেন;
সেই ত্রিশক্তি শক্তির কাছে।
গোটা স্বর্গ সভা হুলস্থুল পড়ে গেল;
পাপ পূর্ণ মিলিয়ে শূণ্য কেউ আজ অব্দি পাইনি!


  


                 রা(তৃতীয় পর্ব)


খসে পড়ল আর ও একটি বর্ণ!
আসামী ঠাঁই দাঁড়িয়ে।
কেউ কোনো কথা বলছে না;
ত্রি শক্তি নিজেদের মধ্যে আলোচনা করছেন।
কার ও স্পর্ধা নেই মুখ খোলার,
সবার হাতে প্রচুর সময় আছে মনে হয়।
কিম্বা না থাকলে ও মানতে হবে!
এখানকার নিয়ম সম্পূর্ণ আলাদা,
কল্পনার অতীত!
সময় নিজের মতো করে চলছে;
হঠাৎ, কোথা থেকে ঘণ্টাধ্বনি শোনা গেল!
ত্রি শক্তি উঠে দাঁড়ালেন।
আজকের সভা শেষ!
কোথায় সবাই যেন মিলিয়ে গেল;
রা কে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে;
যারা এনেছিল সঙ্গে করে তারাই নিয়ে যাচ্ছে।


                          
              ---(চতুর্থ পর্ব)


আসামীর এখন কোনো নাম নেই।
একটা সংখ্যা দেওয়া প্লেট;
পেরেক দিয়ে বুকে ঝুলিয়ে দিল কেউ।
সকল বিচার বিভাগ বন্ধ!
এই সমস্যা সমাধান না হওয়া অব্দি;
সব ধরনের বিচার ব্যবস্হা স্হগিদ।
আগে --- এর বিচার সম্পন্ন হবে,
সবাই কেমন যেন থম্ মেরে আছে।


                 পঞ্চম পর্ব (সমাপ্ত)


এটি কোনো ধর্মীয় কবিতা নয়। কাউকে বা কোনো ধর্মকে আঘাত করার জন্য এ কবিতা নয়। সকল পাঠক দের নিকট আমি ক্ষমা প্রার্থী।
এরপর কি হবে সে বিচার ও আপনাদের।