আমার কাছে শ্রাবণ যতটা না রাবিন্দ্রিক কাব্যের উদ্ভাসিত বর্ষার প্রহর
তার চেয়ে ঢের বেশী একটি নাম, বিস্তর  স্মৃতিময় অনুভূতি।
আমার কাছে শ্রাবণ এক শীর্ণকায় শ্যাম বরণ উনিশ,চঞ্চল একুশ-
ক্যাম্পাসের রুদ্র চেতনার অবিচল সতীর্থ।
মিছিলে, শ্লোগানে, গানের আড্ডায় , কখনোবা অভিমানে,
বিষণ্ণ বিকেলে গাঢ় সিগারেটের ধোঁয়ায়, খুনসুটি আর বিরক্তিতে
একটা গোটা জীবনের মুখ্য অধ্যায়ের প্রচ্ছদে
চেতনার এক বর্ণময় চরিত্র- শ্রাবণ।


বন্ধুত্বের বিরামহীন যাত্রার অক্লান্ত সঙ্গী শ্রাবণ।
শেকল ভাঙ্গার দিনগুলোতে , বখাটে  একুশে জেগে ওঠা প্রেমে-
স্কন্ধে সেই বন্ধুত্বের হাত, আজ স্মৃতিময় যাতনায় আবদ্ধ।
এখন হয়তো সপ্তাহের ব্যস্ততার পড়ে মুঠো ফোনে দুমিনিট স্রেফ।
সেই রাত্রিজাগা দিন গুলোতে দিন বদলের সহযোদ্ধা,
কখনোবা ঈষৎ ঈর্ষা, কখনো নিছক বিরক্তি-
ছয় বছর একই রুমে অনুরাগে- বিরাগে, স্ফূর্তিতে বা যাতনায়।


আজ হয়তো হঠাৎ দেখায় মৃদু হেসে করমর্দন
তারপর নিজ নিজ কক্ষপথে ফেরা বর্তমানের আবর্তে,
স্বার্থপর সময়ের রুক্ষ উদাসী বিরুদ্ধতায়।
তবু সেই বন্ধুত্বের চেতনা, সেই উম্মাতাল একুশের সীমাহীন ছুটে চলা
স্মৃতিতে ফ্রেমবন্দি হয়ে থাকবে তারুণ্যের সাক্ষী হয়ে-
চিরদিন। এখনো কর্পোরেট ব্যস্ততার অবসরে হৃদয়ে উঁকি দেয়-
সেই প্রিয় মুখ- আমার বন্ধু শ্রাবণ।