অনন্ত রজনীর অন্ধকারের অতলে কারারুদ্ধ সত্তা
কখনো চৈতালি রোদ্দুর গায়ে মেখে ছিল অবাধ্য রুদ্রময়-
সে আজ প্রহসনের অতীত, রাতের আকাশ উদ্যমের নীল নয়,
গ্লানিময় লজ্জার মুখঢাকা চাদর, বিষাদের সকরুণ আবাস।
শরত শোভিত সকালে কুমারীর নগ্ন পায়ে শিশির-সিক্ত চপলতা
অথবা কাব্যের ঝোলায় লুকিয়ে থাকা গুচ্ছ কবিতাগুলোর
কবির কণ্ঠেই শব্দ হয়ে বিকশিত হওয়ার প্রতীক্ষা,
কখনোবা অপরাজেয় বাংলা থেকে শাটল ট্রেন, কখনোবা
মুক্তমঞ্চ থেকে সাবাস বাংলাদেশ, ছিল তারুণ্যের মিছিল
আর গণসংগীতের উদাত্ত কণ্ঠ, জাগরণের সুর।
চৈতালি বিমোহন অথবা শারদীয় উন্মাদনা থেকে
নিমেষে অভিশপ্ত চিতার অনলে নির্বাণ!
নৃত্যের ছন্দে নারী দেহে কুঞ্চিত বাক, আজকের
সময়ের দংশনে হায়নার চোখে কামাতুর মাংসের দোল!
এখানকার বোধ শিল্পকে টেনে হেঁচড়ে নিয়ে যায় বেশ্যালয়ে,
পরকাল ব্যাবসায়ীদের স্বার্থ- অংকিত ক্ষেত্রই এখানে ভুবন।  
তাই এখানে কবিতারা বেড়ে ওঠে না, কবির সত্তা মৃত বলে।
অথচ কবিতার অক্ষরে ছিল বারুদের উত্তাপ,
শিল্পের নন্দনকে শিরস্ত্রাণ করে রচিত হয়েছিল হাজারো প্রেম,
দ্রোহ আর মুক্তির অভীপ্সা- পাণ্ডুলিপির উদরে, রুদ্র চেতনার ঔরসে।
মুক্তি এখানে শৃঙ্খলের আঘাতে বিলীন, ক্রমশ বিক্রীত হয়
স্বার্থের লালসায়, বুলেটের কাছে পরাস্ত হয় কবিতার অক্ষর-
অনন্ত রজনীর অন্ধকারের অতলে কারারুদ্ধ হয় সত্তা।