এ কেমন ফেরা
---
তারপর!
ফিরে তো এলে,
আমাদের দুজনের সেই পুরনো স্বপ্নকুটিরে!
কখনও বাতাসের ডানা ঝাপটানো,
কখনও পাতাদের ঘর গুছানো,
কখনও নীরবতার গান,
আমরা একত্রে উপভোগ করতাম।
মাধবীকুঞ্জে এলে বসন্তের পালা
আমরা চাঁদের ডিঙি ভাড়া নিয়ে
সারা গায়ে জোছনার রোদ মাখতাম।
তোমার মনে আছে তো ঠিক ঠিক!
কখন কিভাবে জীবন থেকে
জীবনের সূত্রগুলো লোপাট হয়ে যায়,
তাড়িয়ে নিয়ে যায় অচিন প্রদেশে,
আর আমরা ছিটকে পড়ি দুটো ভিনগ্রহে।
লকডাউনে আমাদের ফের ঘরে ফেরা,
তোমাকে আবার নিজের মত পাব বলে
বিষন্ন সকালে অবয়বে খেলে গেছে রোদ।
চায়ের কাপ আমাদের জন্য অপেক্ষা করে
বারান্দার ছোট্ট কোণটিতে,
বুঝি বা অচেনা হয়ে যাওয়া পাতাবাহারের ঝোপ ছিল
তোমার স্পর্শের অপেক্ষায়।
সেই তুমি ফিরলে চেনা বৃন্তে,
মাঝখানে দুস্তর প্রাচীর,
তোমার নিঃশ্বাসে বিষ, তোমার স্পর্শে বিষ।
নিজেকে রাখি নিরাপদ দূরত্বে,
তোমার চোখের ভাষায় পড়ি, না বলা কথা আর দূর থেকে দেখি তোমাকে।
তোমার চোখের ভাষার মতই
নিথর সন্ধ্যার গোলাপ প্রশ্ন করে-
এ কেমন ফেরা!
নিষ্ঠুর নিয়তি এমনই খেলা খেলে,
নিজেকে প্রবোধ দিই বৃথাই,
স্বস্তি খুঁজি সুইয়ের ডগায়,
আর তুমি এখনও ফ্যালফ্যাল তাকিয়ে
সুমিষ্ট সুগভীর নিরবচ্ছিন্ন জীবনবায়ুর অপেক্ষায়।
১১/০৪/২১