ভিসুভিয়াস
--
নিস্তব্ধ শহরে এখন আর কেউ বাস করে না,
একা পড়ে আছে ক্ষয়ের পালায় পারিপাটি ঘরবাড়ি,
সাজানো বাগান, সুরম্য অট্টালিকা,
শুধু চারিদিকে মৃত্যুর ঘ্রাণ।
ওরা চলে দলে দলে,
আগ্নেয়গিরির অগ্নিদাহে উত্তপ্ত শহর এখন অগ্নিকুণ্ড,
লাভার স্রোত গড়িয়ে গড়িয়ে ছড়িয়ে ছড়িয়ে আসে
ধেয়ে আসে অগ্নিকণা, মানুষ পালায় সব,
খুঁজে সবুজ,খুঁজে জীবন,
আহা! বেঁচে থাকাটাই সবচেয়ে দামী,
সবচেয়ে দামী শ্বাসটুকু, ওটাই কেবল চাই এখন,
চাই কেবলই বেঁচে থাকার আশ্বাস।
কী ছিলো ওই শহরে?
ছিলো মায়ের কোলে দুগ্ধপানে খিলখিল হাসিতে শিশু,
ছিলো ফুল,ছিলো পাখি, ছিলো মৃত আগ্নেয়গিরি।
ছিলো অহংকার, ছিলো লোভ, ছিলো পঙ্কিলের উর্বর ক্ষেত্র।
যারা ছিলো কৃপাণ হাতে,তারা বহুদিন আকাশ দেখেনি,
দেখে নি মেঘ, শীতল বায়ু, দেখে নি মায়ের মুখে বার্ধক্যের বলিরেখা,
পিতার কাশির শব্দ তারা শুনতে পায়নি,
তারা বধির ছিলো, অন্ধ ছিলো।
অন্ধকারের সঙ্গী সবচেয়ে বেশি ছিলো ওরা,
ওরা প্রিয়তমার চোখে দেখেনি আকুলতা কিংবা রাখেনি প্রতিশ্রুতি।
মুহূর্ত সব কেটেছে অবলীলায় নিষ্পেষণে, লুণ্ঠনে,
তারা অবলীলায় চাঁদে কলঙ্ক দিতো,
সূর্যকে অভিশাপ দিতো দিনভর,
অবলীলায় হাতের মুঠোয় দোলাতো ছোট্ট শহরটিকে।
চাঁদ সরে যায় দূরে, সূর্য নেমে আসে কাছে
আগ্নেয়গিরি ছড়িয়ে দেয় লাভা।
ক্ষমা করো, ক্ষমা করো,ক্ষমা করো!
কে দিবে ক্ষমা?
কৃতকর্ম সর্পের ফণা তোলে ক্রোধে উন্মত্ত,
আহা জীবন!
কিসের অহংকার? কিসের দম্ভের দুষ্কর্ম, দর্পের অভিযান?
একটু শীতল বাতাস, একটু সবুজ, একটু আশ্বাস-
খুঁজে ফেরে মানুষ অনুতপ্ত হৃদয়ে।
কখন কি হয় কে তা জানে?
ভাগ্যের পরিহাস ক্রুর হাসি হাসে,
ওরা চলে দলে দলে, নির্মল জীবনের সন্ধানে।
জীবন লুকোয় ভিসুভিয়াসে একত্রে- পাপী কিংবা অপাপীদের।
---১০/০৭/২০১৯