ভণ্ডদের তালিকা
---
কবির সাথে দেখা হতেই প্রগলভ হাসি
"জানো! আমি ভণ্ডদের তালিকা করেছি"।
কবির খেপে যাওয়ার কারণ আমার অজানা।
যদিও নিজেকে কবি ভাবতে নারাজ,
বড়জোর কথক,
তবু আখ্যা দিয়েছে লোকে
কবির যে আছে আলাদিনের চেরাগ
তাই ভালবেসে নাকি স্বার্থ উদ্ধারে
লোকে তাঁকে কবি নামে আখ্যায়িত করেছে।
চাল নেই চুলো নেই, তবু আছে তো
আলাদিনের চেরাগ,
আলো নিতে তাই আছে স্বার্থান্বেষীদের মিছিল।


কবির ভাষায়
"আজকাল সুশীলের উপদ্রব বড় বেশী বেড়ে গেছে,
যে বৃক্ষ তাঁদের ছায়া দেয় না, ফল দেয় না
অনায়াসে তাকে উপড়ে ফেলে,
মুখে থাকে মায়াকান্না---গেল গেল গেল সব বুঝি,
যখন পান থেকে খসে চুন;
যেদিকে বৃষ্টি সেদিকে ছাতা ধরা ভণ্ডরা
নিজের সুবিধামত কথা বলবে।


নিজের সুবিধামত ব্যাখ্যা দিবে ঘটনার,
মুখে ছিপি এঁটে  বসে থাকবে
যদি না নিজস্ব কোন বিষয় থাকে ঘটনা বা রটনায়।
ভণ্ডরা সত্য বদলে দেয়,
কুপ্রবৃত্তি ঘুরপাক খায় একই বৃত্তে,
বার বার একই বৃত্তে আবর্ত্তন,
রক্ষণশীলতাই মৌলবাদ,
যেখানে থাকে না চিন্তার ডানা মেলা।
ভণ্ডদের তালিকা আপাতত অপ্রকাশিতই থাকবে,
হয়ত আমার মৃত্যুর পর প্রকাশিত সে তালিকায় জ্বলজ্বল করবে
মুখোশধারী কিছু সুশীলের নাম,
আপাতত যারা নাম কিনেছে মানবতাবাদী বলে,
আসলে এরাই রক্ষণশীল, ঘোর মৌলবাদিত্বে আক্রান্ত"।


কবি যখন চুপ করে যায়, কথার
প্রতিধ্বনি হয় আকাশে বাতাসে।
আমি ভাবি কবি কি আসলেই কবি
নাকি কথক যে জুড়ে যায়
কথার চাদর!
সে চাদরে প্রস্ফুটিত হয় ভণ্ডদের নাম ধাম পরিচয় আর মুখোশের উন্মোচন,
আমি তো খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ
সারাক্ষণ পেটের চিন্তায় আমি কাতর,
বড় বড় ভাবনাগুলো
আমার জন্য নয়।
তবে ভণ্ডদের চিনে নিতে আমারও বড় সাধ জাগে,
ইচ্ছে হয় প্রাণভরে---
না থাক, এটাও থাকুক অপ্রকাশিত।
২৮/০৩/২১