(কৃতজ্ঞতা তার কাছে যে দেয় মাথার কিরা)


ক্যান যে এমন মাথার কিরা দিতে গেলা!
কওতো এহন কেমনে আসি এই দূর গঞ্জের পথ-ঘাট পাড়ি দিয়া!
মাথার কিরাতো ভালো না মাইনসে কয়,
বুকের মধ্যি কেমন য্যান ধড়ফড়ায়; কেডায় শিখালো কিরা কাটা?


কবিরাজের কথা শুনে গাছের ডালে বান্ধো তাবিজ,
পরাণবন্ধু য্যান ফিরা আসে তাড়াতাড়ি, আঁচলে বান্ধো সাঁচিপান।
ক্যান যে এমনতরো উতালা হও বুঝি না কিছুই তা!
হু হু করে বুকের মধ্যি বৈশাখী ঝড়; শ্রাবনের একটানা বাদলাধারা।


কতো কিছু ধুয়ে যায় খালি যায় না মনপোড়া কষ্ট,
পুড়ায় বুঝলা, খুব পুড়ায় তুষের অগুনের নাহান নিভে আর জ্বলে-
তোমারে কাছে না পাওয়ার কষ্ট, ঘুম আসে না মোটে
ওই গতরের ছোঁযা, চুলের ঘ্রাণ না পাইলে মনডা কেমন য্যান পুড়ে!


ক্যান যে এমন মাথার কিরা দিতে গেলা!
জানো না কাল থিকা গাড়ী-ঘোড়া, ডিঙ্গা-কেরাইয়া লঞ্চ-ষ্টীমার সব বন্ধ,
কেমনে আমু কওতো সোনা, মিলিটারী-পুলিশ নামছে
রাস্তায রাস্তায়, মোড়ে মোড়ে বন্দুক নিয়া দাঁড়াইছে; ‍যদি ধইরা নেয় জেলে।


দেহডাই পইড়া আছে এই গঞ্জের হাটে-মাঠে-ঘাটে
পোড়া মনডা চইলা গ্যাছে টিনের ঘরে যেহানে ঘুমায় একলা পরাণপঙ্খী।
ঘুম তার আসে না তাও জানি খালি ডানা ঝাঁপটায় ,
এপাশ ওপাশ কইরা রাত কাটে বেশুমার জ্বালা-যন্ত্রনায় আর হা-পিত্যেশে।


আহারে জীবন! কও দেহি শুনি এমন ক্যান হয়,
দুই ডালে দুই ফুল দেখে আর হাসে-কাঁদে কেউতো কাউরে পারে না ছুঁতে।
প্রজাপতি, ভ্রমর আসে মধু খেয়ে উড়ে যায় তারা-
থাকে না ক্ষণকাল শুকণো ঠোঁট ভিজলেই তড়িঘড়ি দেয় আচানক উড়াল।


তয় ভাইবো না সোনা, আসুম এই অতিমারি গেলে
আবার একসাথে হাত ধরে ঘুরবো, একথালে খাবো, ঘুমাবো এক বালিশে।
ফিস ফিস কথা কবো কানে কানে দুপুর-রাতে,
জানবে না কেউ সোহাগের চেরাগ জ্বালাবো শরমের আন্ধার আঙ্গিনায়।
----------------------- ০ ----------------------
২২ জুলাই ২০২১, বৃহস্পতিবার, সকাল: ১১:০৩ মিনিট, কাব্যকুঞ্জ