(আমার কবিতার সকল সম্মানিত সুহৃদ পাঠকদের করকমলে)


এ সব হচ্ছে টা কি?
দিন দুপুরে মানুষ মেরে উল্লাসে যত্রতত্র নাচন কোদন,
থানাতে চুক্তি করে হাওয়ায় উড়ে খুনীর বিদেশ গমন।
থানার বাবু হুক্কা ফুকিয়ে মাসিক বেতন কেমনে পায়?


এ সব হচ্ছে টা কি?
সকাল সন্ধ্যা ভর দুপুরে লাশ পড়ে যায় পথে ঘাটে খামারে
হাসিমুখে ঘুরায় ছড়ি প্রকাশ্য রাজপথে নাটের গুরু বাহারে।
কে ভাবে এই সোনার দেশে গরীব দু:খীর ব্যক্তি নিরাপত্তায়?


এ সব হচ্ছে টা কি?
পথে ঘাটে ঘরে বাইরে কার্য্যালয়ে স্কুল কলেজ মাজার মাদ্রাসাতে
বলাৎকার আর খুনের উল্লাস অসম সম্পর্ক চলছে বাপ বেটিতে।
গ্রামগঞ্জে ধর্ষণ শেষে গলা কাটে, চোখ তুলে নেয় হিংসা ক্রোধে।


এ সব হচ্ছে টা কি?
শ্লীলতাহানির ভিডিও করে বাজার সয়লাব সব মোবাইল ফোনে
চার থেকে চল্লিশ বা আশি কেউ আর পাচ্ছে না রেহাই এখানে।
লাশ হয়ে যায় ফিরে না কেউ, আসলে সোচ্চার হয়ে প্রতিরোধে।


এ সব হচ্ছে টা কি?
বাসে রেলে অটো রিক্সায় প্রাইভেট গাড়ীতে চলার পথে দিনে রাতে
জিম্মি করে শরম লুটে লোভ দেখিয়ে আর মিষ্টি কথার ফুলঝুরিতে।
স্বপ্ন দেখায় বিয়ে করে সংসার করবে সুখ শান্তিতে জীবন ভরে দেবে।


এ সব হচ্ছে টা কি?
পৌরুষ বিষ পেটে ঢেলে গা ঢাকা দেয় খোদার ষাঁড়গুলো ছলা কলায়,
গর্ভবতী পায় না সন্তানের স্বীকৃতি; লাঞ্ছনায় ভুগে মরে মরন জ্বালায়।
তাদের পাশে কে দাঁড়ায় আর নষ্টা বলে ধিক্কার দেয় নারীর স্বভাবে।


এ সব হচ্ছে টা কি?
মামলা মকদ্দমায় ঘুষ উৎকোচে আইন আদালত যায় বদলে সারা দেশে
অপরাধী খালাস পেয়ে আবারও একই কাজ করে খোলামেলা প্রকাশ্যে।
শকুন এখন যায় না দেখা কোথাও, ন্যায় বিচার আর নাই যে দেশে।


এ সব হচ্ছে টা কি?
বুকের কাপড় গলায় তুলে নারীরা সব রাস্তায় নাচে অধিকারের দাবীতে,
কিসের দাবী কে বুঝে তা কেউ জানে না এ তালা খুলবে কোন চাবিতে।
খুন আর গুম ত্রাসে ঘুম আসে না চোখের পাতায় কুচক্রীরা নানা বেশে।


এ সব হচ্ছে টা কি?
ঘুমের ঘোরে মায়ের কোল থেকে মেয়েকে নিয়ে যাচ্ছে ঝোপে ঝাড়ে,
কাজের মানুষ কাজের শেষে সন্ধ্যায় আর ফিরতে পারছে না ঘরে।
দু’দিন পরে লাশ পাওয়া যায় খালে বিলে খানা ডোবা পুকুর পাড়ে।


এ সব হচ্ছে টা কি?
যৌতুকের জন্য গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারে কত নতুন বৌ ঝিকে,
গাছের সাথে বেধে নির্যাতন করে স্বাধীন দেশে স্বাধীন মায়ের জাতিকে।
থানা পুলিশ মামলা নেয় না ঘুষ খেয়ে দোষ চাপায় নিরপরাধীর ঘাড়ে।


এ সব হচ্ছে টা কি?
যথেচ্ছা যৌনাচারে ছেয়ে গেছে শহর বন্দর গাও গেরামের অলি গলি,
কেউ মানছে না কারো কথা মগের মু্ল্লুক ভাবছে সবাই সত্যি বলি।
মদ মাগীতে মাতছে সব সাধের শহর বন্দর নেশায় ঝিমায় ফ্ল্যাটবাড়ী।


এ সব হচ্ছে টা কি?
মাসোহারায় লেজ উচিয়ে কুত কুত স্বভাবে পোষ মেনে যায় বিশেষ প্রাণী,
ওরা আবার তকমা ঝুলায় খ্যাতি গলায় না কি কলুর বলদ টানে ঘানি।
কি সব আবোল তাবোল চলছে দেদার দিচ্ছে চাপা রাস্তাঘাটে কলের গাড়ী।


এ সব হচ্ছে টা কি?
দোষা দোষী রুষা রুষী রাজনীতিতে ন্যায় নীতিতে কোথাও নেই স্বচ্ছতা,
পর্দা দিয়ে ঢাকতে দোষ ব্যস্ত সবাই কাঁচা ভাবনায় নেই কোন পরিপক্কতা।
আমি তুমি সে তারা আম জনতা অবাক চোখে দেখি চেয়ে ঝুলছে মুলা।


এ সব হচ্ছে টা কি?
স্বপ্ন গুলো দু:স্বপ্ন হয়ে তাড়া করে রাত বিরাতে বুকের জমিন হয় খালি,
হয় না পূরণ মনের আশা, ভালবাসায় প্রতারনা, আশায় শুধু গুড়ে বালি।
কড়কড়ে নোট উড়ছে দেখ বাইজির হেরেমে যেন ফুর ফুরে শিমুল তুলা।


এ সব হচ্ছে টা কি?
অন্ধকারের গোদ গোদানো শুয়োরগুলো আলোয় এলে যেন নিষ্পাপ ফেশেরতা,
ওদের গায়ে আঁতর নাক উঁচু সব সুঘ্রানে বাতাস ভারী অপরাধে নির্লিপ্ততা।
লম্বা গলায় বাণী শুণায়, মালা জপে ভাণ ভণিতায় ও মুখোশধারী শয়তান।


এ সব হচ্ছে টা কি?
অপরাধ প্রমানিত হলেও তনন্ত, রিমান্ড, রিট আবেদনে খেলা চলে মুচলেকায়
বিলম্বেতে সব ভুলাতে নতুন ফ্যাশন বিব্রত বোধ; সবই বুঝতে পারি ধাক্কায়।
সবুজ শ্যামল মা জননী আঁচল পেতে রক্তে ভেঁজে একাত্তুরের স্বাধীন ময়দান।


এ সব হচ্ছে টা কি?
ঘরের বৌ ঘোমটা ফেলে পর পুরুষে ইচ্ছেখুশী যাচ্ছে চলে তুড়ি মেরে বিধান,
জোয়ান ছুড়ী, হোক না বুড়ী থাকুক ঘরে দু’তিন স্বামীর গন্ডা চারেক সন্তান।
ওসব এখন কেউ দেখে না টাকা পেলে বাদ বিচার নাই ধর্ম কর্ম জাত বিজাতে!


এ সব হচ্ছে টা কি?
কোলের শিশু গলা টিপে মারছে মা, বাপ ও কিন্তু বাদ যায় না সুযোগ পেলে,
সব কেমন যেন রুক্ষ স্বভাব দিনকে দিন বিশ্বাস হারা লোভ লালসায় মত্ত হলে।
সবার চেয়ে দামী এখন গায়ের জোর আর নগদ টাকা ঋসি মুচি বেশ্যার হাতে।


এ সব হচ্ছে টা কি?
স্বার্থের লেজে পড়লে পাড়া ঝিমান কান হচ্ছে খাড়া খড়গ হাতে ছুটছে মাতাল,
সামনে পড়লে হিতাহিত জ্ঞান ভুলে কুপিয়ে মারে দিনকে দিন বাড়ছে পঙ্গপাল।
বুদ্ধিজীবি বিজ্ঞপ্রাণী টানছে হুঁকো ছাড়ছে ধোয়া; গা বাচান মন্ত্রে বেশ দীক্ষিত।


এ সব হচ্ছে টা কি?
আপন ঘরে দুয়ার এঁটে সরষের তেল নাকে মেখে ঘুমিয়ে ব্যঙ ডাকাচ্ছে নাক,
কে কোথায় পড়ছে মরছে ওসবে আর কিসের দরকার ফুরিয়েছে ভোটের ডাক।
ছেলে মেয়ে য়্যুরোপ আমেরিকার নাগরিক এখন ‍উচ্চ শিক্ষায় হচ্ছে তারা শিক্ষিত।


এ সব হচ্ছে টা কি?
সুযোগ পেলেই তালে গোলে যে যার মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাচ্ছে রসাল কোষ,
দিচ্ছে মওকা উপরওয়ালা আইনের ফাক ফোকরে এতে আর কার কি দোষ!
পেটের ক্ষুধা আইন বুঝে না, ডাইনে বায়ে সব হালাল ভেবে মুখটি বাড়ায়।


এ সব হচ্ছে টা কি?
কোষাগারে পুকুর চুরি দুধের গন্ধে বিড়াল পাগল কাঁঠাল পাতায় লাফায় ছাগল
রূপবানের রূপের রোশনাই নাচায় বাঁদর হাতের রশি হচ্ছে ঢিলা নেশায় পাগল।
আর কতকাল চলবে এমন সামনে শমন হিসাব কিতাব বিবেকের সীমা ছাড়ায়।
================
২০ জুলাই ২০১৫, সোমবার