প্রতিটি জন্মদিন পেছনে ফেলে দেয় একটি বছর
মুছে যেতে থাকে কত কত শব্দের ঝাড়বাতি,
গহীনতর স্পর্শের আন্দোলন।
হেলেঞ্চা ঝোপের ভেতর লুকোচুরি খেলা ফাল্গুন-শীত
দাঁড়িয়ে থাকে প্রতিমার মতো একটি জীবন, একটি সহচর।


হৃদয়টাকে খুঁজে পাচ্ছি না কোথাও
শস্যের আবাদে মেশা রাসায়নিক বিষের মতোই কাতরাচ্ছে কোথাওবা!
বন্ধু-প্রেমিক. প্রেমিক থেকে প্রতারকের প্রবঞ্চনা
কালচে খয়েরি হয়েছিল বেশ আগেই...
শব্দের ডামাডোলে বধির শ্রবণেন্দ্রিয়
ঝরে ঝরে পড়ছে স্বপ্নগুঁড়ো।
মা বলতেন, হাভাতীদের স্বপ্ন থাকতে নেই।
দিদি বলতেন, প্রেম এক দুর্গম পাহাড়ের নাম।
বাবা মেলে ধরতেন পৃথিবীর জটিল শব্দ পুরাণ।
তবুও স্বপ্ন আঁচলে ধরে রাখি
জলের মতো গড়িয়ে পড়ে তারা
পাথরের বুকে জন্ম নেয় ঘাস-লতা;
জীবজগতের কান্না প্রাতঃরাশের টেবিলে উঠে আসে।
টেবিলের কাঠের আত্মায় জমা হয় সংলগ্ন সমাচার।
উইকলেনের বঞ্চনার টুকরো টুকরো কাচ
বাসমতি চালের সুঘ্রাণে গেঁথে থাকে
মাসিক ভাতার সাথে সমূহ আর্তনাদ জড়ো করে সবুজ চায়ের সাথে পান করি ...
পানকরি স্বরযন্ত্রের দীর্ঘশ্বাস...

চলন্ত দিনে  চুমু ভাঙার শব্দ আর বেঁচে থাকার আরক।
বিকেলের বাহারী হাওয়ায় হতাশায় গলে যাওয়া রোদের রুমালে চোখ মুছি
আকাশের বানান লিখতে লিখতেই জেগে থাকি  প্রজাপতি ডানা
যদিও আকাশ মানে শূন্যতা কে না জানে!


মনের নাব্যতা দিয়ে নদীদের নাব্যতা সারিয়ে তুলছি
নর্দমা কাঁদছে গুটে-জমানো বেদনায়...
সূচীপত্রের নকশায় কাটাকুটি
একচোখ চশমার কাচ মুছতে মুছতে
ডিনারের সাথে আগামী  দিনের পরিকল্পনা চিবিয়ে চিবিয়ে খাই।


হাঁটছে জীবন
পেছনে পড়ে থাকে পুকুরের ঘাটকূলে ননদ ভাবীর গল্পের আয়োজন।  
শোনা হয়ন,  লটকা জবার ঝাড়ের আত্মকথন
পাখিদের কান্নার রোল
বৈশাখ বাতাসের দমকা হাওয়া
গৃহস্থালি কর্কশতা মিলেমিশে আলকাতরা হয়ে যায়।
শোনা হয়নি ঘাসের জীবন।
খোলা আর বন্ধ করা বাতায়নের কষ্ট,
দরোজার অপেক্ষার আত্মকথা
প্রেমপত্রের উত্তর দিতে না পারার অক্ষমতা
হে সময়--জ্বলনে, গলনে, রোদনে, মালিন্যে দিশেহারা হিসেবি হৃদয়
কে না জানে জীবন তো কেবল শুরু ও শেষের উপাখ্যান!