চূড়ান্ত লেনদেন


ভাগ্যিস হয়েছিল পশুজ অতিমারি
দলে দলে ফিরে অন্য প্রদেশ থেকে
রোদে জলে ভিজে চোখের পলকে
পথেই জমেছিল শব সারি সারি।


মৃত্যু-সংখ্যা দিয়ে হয়েছিল পরিচয়,
দেশবাসি জেনেছিল এক নতুন সন্ত্রাস
কোথায় গিয়েছিল? কোথায় বাস?
অতিমারির থেকেও কঠিন দুঃসময়।


শহরের ঝা ঝা চকচকে রাস্তার নীচে
বহতী কালো আলকাতরার ফল্গু প্রবাহ
গলিত ফোস্কার নীচে  ভীষণ চর্মদাহ,
অচেনা মানুষ ছুটেছে খাদ্যের পিছে।


দানাপানি জুটবে খাটলে গায়ে গতরে,
রাজমিস্ত্রী থেকে জোগালি, তাই সই
পেট ভরলেই হলো, কোন বাছ নেই
নাগের মত নাচিয়ে যায় পিশাচ সাপুড়ে।


সাপুড়েগুলো থাকে অনেক দূরের সৌধে,
দালাল পাঠিয়ে কাজের নেয় হিসাব
কড়ায় গণ্ডায় বুঝে নেয় শ্রমের লাভ
ছিবড়ে গতরগুলো ঝুপড়িতে বাসা বাঁধে।


ঝুপড়িতে আছড়ে পরে যমরূপী অতিমারি
সাপুড়ের বাঁশীতে এখন নেই কোন আওয়াজ
দুমুঠো খাদ্যের জন্য মেলে না কোন কাজ,
অভাগা মানুষগুলো স্বদেশের পথে দেয় পাড়ি।


দেড় হাজার মাইল পায়ে হেঁটে ফেরা,
কোলে শিশু, কাঁধে বোঁচকা, পিছনে ফেউ,
রাস্তায়, রেল লাইনে চলে মানুষের ঢেউ
শাসকেরা তখনও চেনেনি এরা কারা?


ক্লান্ত, ঘুমন্ত মানুষকে পিষে দেয় চলন্ত ট্রেন,
টিভি’র পরদায় কোয়ারেন্টাইনে বন্দী থাকা
অর্ধমৃতেরা ছিন্ন দেহের নীচে স্ক্রোল করা লেখা
দেখে বোঝে পরিযায়ী জীবনের চূড়ান্ত লেনদেন।