গর্বিত নারীশক্তি
 
তুমি আমার স্ত্রীর সবচেয়ে প্রিয় বান্ধবী ছিলে
তোমার ছিল কঠিন ব্রঙ্কাইটিস, হাঁফও হতো
ইনহেলার শুরু করোনি।
তবে প্রতিজ্ঞা ছিল বিয়ে করবে না।
 
আমার বিয়ের পর অনেকদিন তোমাকে দেখিনি
দীর্ঘ পঁয়ত্রিশ বছর পর ছেলের বিয়ের কার্ড নিয়ে
আমন্ত্রণ জানাতে গিয়েছিলাম তোমার নিজস্ব ফ্ল্যাটে।
 
তোমার কাহিনী তোমার মুখে শুনলাম।
 
তোমার বাবা মোহিনী মিলের সাধারণ কর্মচারী ছিলেন।
কষ্টের সংসার। তুমি গ্রাজুয়েট হয়ে কম্পিউটার শিখলে।
চাকরি পেলে। ঠিক করলে মেধাবী ছোট ভাইকে
শিক্ষিত করবে।
 
একদিন তোমার বৃহত্তর পৃথিবীটা ঠিক পথে এল।
কিন্তু, তোমার পৃথিবী নয়। বাবা-মায়ের অনুরোধ
রাখতে বিয়ে করলে। স্বামীর ঘর করলে।
 
দেড় বছর না যেতেই বুঝে গেলে, তোমার বিয়ে
তোমার সাথে হয়নি, হয়েছে তোমার পেশার সাথে।
উত্তর কলকাতার ক্ষয়িষ্ণু পরিবার। নিঃশব্দে
সরিয়ে নিলে নিজেকে। কোন অনুরোধ-
উপরোধের সুযোগ না দিয়ে। ডিভোর্স করোনি।
নিজের ফ্ল্যাট কিনলে। এখনো চাকরি কর।
 
বৃদ্ধা মা দিদির কাছে। তুমি একাই থাক।
 
সেই আগের মত দিব্বি হাসিখুশি আছো।
 
ছেলের বিয়েতে এসেছিলে।
সবচেয়ে দামি অলংকারের উপহার তোমারই দেওয়া।
গর্বিত নারী শক্তির প্রতীক।
 
আমন্ত্রণের দিন তোমার সাথে চা খেতে খেতে
টেবিলের উপর দেখেছিলাম ইনহেলার-
তোমার একটাই দুর্বলতা। 


#পঙ্কজ কুমার চ্যাটার্জি।


সুপ্রভাত।
🌵🌹