মায়ের মন


রাত দশটা। দুপ দাপ পায়ের শব্দ।
আমাদের বাড়ির পাশের গলিতে মনে হলো
ঢুকেছে শ্বাপদ কতগুলো।
রাতের খাওয়া দাওয়া শেষ। শোবার আয়োজন করছি।
কর্তা কানে কম শোনেন। টিভিতে শেষ খবর। সেদিকে চোখ।
ঘরে ডিম লাইট জ্বলছে শুধু। আলতো করে জানালা বন্ধ করে দি।
জানালার সামান্য ফাঁক দিয়ে কান পাতি। শুনি অস্ফূট আওয়াজ।
ছেড়ে দে! ছেড়ে দে! এক অভাগি মেয়ের কাতর আকুতি।
মায়ের কান কি ভুল শোনে। চুপ করে সরে আসি।
আস্তে আস্তে পাশে ঘরের দরজা দিয়ে তাকিয়ে দেখি।
মেয়ের আমার রাত জেগে পড়ার অভ্যেস। শান্ত স্বভাব।
শব্দ না করে চলে আসি। আস্তে আস্তে বিছানায় শুয়ে পড়ি।
কিছুক্ষণ পরে কর্তা টিভি বন্ধ করে পাশে শুয়ে পড়েন।
মেয়ের ঘরের আলো শোবার ঘরের দরজার চৌকাঠে পড়ে।
সেই দিকে তাকিয়ে থাকি। শুধু ভাবি। ভাবি আর ভাবি।
সারা দিনের সংসারের ধকল। তবুও ঘুম আসে না। গুমরে কেঁদে উঠি। নিঃশব্দে।


পরদিন-
সেদিন কেন জানিনা নিত্য দিনের মত ভোরে ঘুম ভাঙেনি।
মেয়ে এসে ডাকে। পাশে বসে। আমি বিছানায় উঠে বসি।
“মা, শরীর ভালো আছে তো?” কিছু উত্তর দিতে পারিনা।
আমার দুচোখ দিয়ে বেয়ে আসা নোনতা জল মুখে ঢোকে।
মেয়ের গালে হাত বুলিয়ে দিই।
মা হয়ে একটা কথাই শুধু বলতে পারি, “সাবধানে থাকিস, মা।”