রসিদকে খুঁজি


আমি স্কুলে পড়তাম, রসিদ পড়তো না।
রোজ স্কুল থেকে ফিরে দুজনে চলে যেতাম
পাহাড়ের কোলে বেদানা গাছটার নীচে।
আমার লেখা গল্প পড়তাম, রসিদ শুনতো,
আনন্দে আমাকে জড়িয়ে ধরতো, বলতো,
“তুই গল্প লেখা ছাড়বি না কোনদিন।”
মা-হারা ছেলেটা বোধহয় আমার গল্পে
খুঁজে পেয়েছিল হারানো মায়ের স্মৃতি-সুখ।
একদিন রসিদ আকাশের বুকে হারিয়ে গেল।
তারপরেও আমি যেতাম বেদানা গাছের নীচে,
অনেক ক্ষণ চুপ করে বসে থেকে চলে আসতাম।
গল্প লিখতাম, কিন্তু শোনবার মানুষ আর নেই।
একদিন গাছের নীচে বসে আছি,
পকেটে হাত দিয়ে পাই এক টুকরো চক পেন্সিল।
তা দিয়ে বেদানা গাছের গায়ে দুটো চোখ আঁকি,
আমার লেখা শেষ গল্পটা পড়ি, শেষ হলে দেখি
ডায়েরির পাতার দুফোটা চোখের জল, তা দিয়ে,
আঁকা চোখ দুটো মুছে দিই, বাড়ি ফিরে আসি।
ঘরের আলমারিতে তুলে রাখি ডায়েরিটা,
আর কোন দিন আমি গল্প লিখিনি।
রাত হলে জানালা দিয়ে আকাশের বুকে
খুঁজে বেড়াই রসিদকে, এখনো পাইনি।
(আফগান-আমেরিকান খালিদ হোসেইনি’র লেখা বিখ্যাত উপন্যাস ‘দি কাইট রানার’-এর ছায়া অবলম্বনে)