শয়নে স্বপনে কথনে চলনে
গড়নে যে আমি বাঙ্গালী
প্রাণে গানে মানে উৎসবে আয়োজনে
ভরা যে কাঁধের পুঁটুলি।


চর্যাপদের আঁখর থেকে
প্রেম লিখে চলে গান
বাউলের সুরে নিগূঢ় বাঁধনে
কোকিলের কলতান।


আমি সে গানের শ্রোতা শুধু নই
কন্ঠেও তুলি সুর
সমবেত কন্ঠে সে গান ভাসে
আকাশ সরণিতে বহুদূর।


জন্মেছি আমি হয়তো শুভক্ষনে
অথবা শত্রু'র অশুভ লগনে
এ'মাটিতে জন্মে বাধ্য যে আমি
লড়বো যখন আক্রান্ত স্বজনে।


আকাশে বাতাসে সুখে'হাহুতাশে
আমি অবিচল বাঙ্গালী
আমিও আমার কৃষ্টি পীড়নে
শ্লোগানে হুঙ্কার তুলি।


শ্লোগানে গর্জে বজ্রে বাতাসে
আমি প্রমিত বাঙ্গালী
কৃষ্টি-নিগ্রহ নিবৃত্ত না হলে
অস্ত্র কাঁধে নিতে নাহি ভুলি।


আমার পিতৃপরিচয় পাবে
ক্ষুদিরামের কন্ঠে ঝোলানো ফাঁসে
বাহান্ন সনের রাজপথে অথবা
একাত্তুরের রণাঙ্গনের ঘাঁসে।


আমার ভায়ের গৌরবগাঁথা
শুনতে যদি কখনো ইচ্ছা জাগে
রক্তকাঁদার মাটি হাতে নিয়ে
শুঁকে নিও ওহে গভীর অনুরাগে।


রক্তকাঁদার মাটিতে গড়া
সুবিশাল আমার অট্রালিকা
তিরিশ লক্ষ চন্দ্রিকালোকে
উদ্ভাসিত সে মূর্ত মৃত্তিকা ।


আমার কৃষ্টি আমার বীর্য
নিবীর্য করার দুঃসাহসও যদিও জাগে
আত্মহননের পথই বেছে নিও
নির্মম অসহনীয় মৃত্যু হবার আগে ।


এদেশের মাটি করে নাই ক্ষমা
কোন দূর্বৃত্ত কোন দুর্জনেরে
আমার ভাষার ঐকতানের
শক্তি অসীম বিশ্বের দরবারে ।


আত্মপরিচয়ে গরীয়ান আমি,
আমার ঠিকানা গৌরবের সমাচারে
আমি ধনাঢ্য ধর্ম-বর্ণে সেতুবন্ধনে
রবীন্দ্র, নজরুল, লালন সাঁইয়ের সুরে।