সেই পথে তুমি ছিলে, ছিলাম আমিও,
শত সহস্র বছর আগে।
বিচিত্র ফুলে রাঙা পাহাড়ি সে পথ,
উত্তাল প্রপাতের রেণু, ছিল ছড়ানো।
গিয়েছিলে কোনো এক মন্দিরে,
পরনে সফেদ বসন।
জানিনা তোমার হৃদয়ে ছিল,
কোন দেবতার আসন।
আমি এক ক্ষত্রিয়, ভবঘুরে অভাজন,
তোমার রূপে কেড়েছিল আমার,
মুগ্ধ দুই নয়ন।
হৃদয় গভীরে কিভাবে পশিলে?
কিছুই বুঝিনি তার।
শুধু বুঝেছিলাম ক্লান্ত পথচলা,
ক্ষান্ত হয়েছে আমার।
কোন এক সন্ধ্যাবেলায়,
সূর্য নামিলে পাটে,
সখীদের সাথে স্নান করিতে,
গিয়েছিলে নদীর ঘাঁটে।
আমি অসহায়, শুধু দেখে যাই,
তোমার নিখুঁত রূপ,
তোমার ছবি, তোমার ভাবনা,
মনে গেঁথেছিল খুব।
দিনগুলো সব ভাবনায় গেলো,
নির্ঘুম গেলো যামি।
কি করে মনের গোপন কথা,
তোমারে শুধাবো আমি?
একদিন, অকস্মাতে,
তোমার সাথে হয়ে গেলো দেখা,
নগরীর রাজপথে।
বুকে বল নিয়ে, চোখে চোখ রেখে,
বললাম মনের কথা।
তোমার চোখেতে দেখতে পেলাম,
গোপন কোনো ব্যাথা।
কাঁতর কণ্ঠে শুধাইলে আমারে,
আমি এক সেবাদাসী।
কি করে আমি মন্দির ফেলে,
তোমাকে ভালবাসি?
দেবতার কাছে বন্দী আমি,
তার ইচ্ছাতেই সব।
প্রান আছে, তারপরও আমি,
প্রাণহীন এক শব।
সাহস করে, কাতর স্বরে,
বললাম আবেগ ভরে।
রাজী যদি থাকো, অজানা ভুবনে,
পালাবো দুইজনে।
অস্ফুট স্বরে, ছলছল চোখে,
বললে আমাকে।
নিয়ে চল তবে, মুক্ত করে,
দেবতার গ্রাস হতে।
পুলক জাগিল মনে,
এক নিমিষে তোমারে বসালাম পিছনের আসনে।
টগবগিয়ে ছুটল ঘোড়া নগরীর বুক চিড়ে।
সহসা এক কাঁতর ধ্বনিতে,
গড়ায়ে পড়িলে পথে।
ফিরে চেয়ে দেখি, ঘাতকের শর
বিঁধে আছে তোমার পিঠে।
প্রাণবায়ু আর দেহে নাই তোমার,
পড়ে আছো পথের প’রে।
মুক্তির সাধ মিটে গেলো তোমার,
ঘাতকের নিঠুর শরে।