বেলা পড়ে এলো রে তিতাস নদীর বাঁকে,
জোরসে দাঁড় টানরে মাঝি যাব বাড়িতে।
বাড়ীর ঘাটে একলা বসে চাইয়া আছে মা,
কত দিন হইলো আমি মায়’রে দেখিনা।
বাণিজ্যতে বার হইছি জৈষ্ঠ মাসের শেষে,
ভাদ্র আশ্বিন গেল চলে ফিরলাম না রে দেশে।
কত নগর কত ঘাঁটে ভীড়লো আমার তরী,
মনের মাঝে মা’র ছবি, ভুলতে কি আর পারি?
এতো দিনের পরে আজ যাত্রা বাড়ীর পথে,
মনের মাঝে উথাল পাতাল কত কথা ভাসে।
চারপাশে দেখিস রে চাইয়া সাদা কাশ ফুল,
সাবধানে নাউ চালা মাঝি হয়না যেন ভুল।
আছে যত লগি বৈঠা সব লাগা তুই কাজে,
তুফানবেগে চলুক রে আজ আমার পঙ্খীরাজে।


মায়ের জন্য নিছি কিনে মিহিন পারের শাড়ি,
পাল বাছা মিষ্টি পান আর তরতাজা সুপারি।
তিলের খাজা চিনির গজা নিছি গামছা ভরে,
চারটি মাস হইলো মাঝি দেখিনা মায়ে’রে।
বাড়ীর ঘাঁটে আম গাছ দাদার হাতে বোনা,
তার শিকড়ে রাখিস বেঁধে আমার ডিঙ্গি খানা।
এক লাফে নাইমা গিয়া ধরব মায়ের চরন,
ভুলেও দেখিস না আমার জলে ভরা নয়ন।