প্রিয় সন্তান আমার,
তুমি কি শুনবে না গল্প, বাবার ছেলে বেলার?
অঁজ পাড়াগাঁয়ের অন্ধকার দিনের কথা,
সব কিছুতেই মিশে ছিল অকৃত্রিম আদিমতা।
বীজতলায় বেড়ে উঠা ধানের কচি থোকা,
বেগুনি কচুরিপানা ফুলে হলুদ রঙের ফোটা,
কিষাণীর মাচায় শীম লাউয়ের নরম লতা,
তার নিচে বেড়ে উঠা সবুজ ধনে পাতা।


তুমি কি শুনতে চাও না সোনা আমার?
গেঁয়ো মাটির গন্ধ জড়ানো গল্পের ভান্ডার।
গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদে চাষির পাটচাষ,
অন্তর শীতল করা বুড়ো বটের বাতাস।
লবন মরিচ মাখানো কাচা আমের চাটনি,
গাছ তলায় বসে থাকা কৃষাণ কৃষাণী।
খড়ায় পুড়তে থাকা মাঠ ভরা ধান,
আকাশ পানে চেয়ে চেয়ে বৃষ্টির সন্ধান।

কাছে এস বস বাবা, গল্প শোনাই,
কি সুন্দর দিন কাটিয়েছি ছেলে বেলায়।
খাল বিল ভরে উঠত বর্ষার নতুন জলে,
মাছ ধরতে ব্যাস্ত সবাই তুমুল আনন্দে।
বৃষ্টি আসুক বাজ পড়ুক ভয় নেই কারো,
তাতেই যেনো আনন্দ বেড়ে যেতো আরো।
চাঁদনী রাতে নৌকা নিয়ে বিলের জলে ভাসা,
চারপাশের দুনিয়াকে নতুন করে দেখা।


তুমি কি হাঁটতে চাও বাবা, আমার সাথে?
ভুলে যাওয়া গ্রামের ধুলোমাখা পথে।
দিগন্ত ছড়ানো মাঠে সরিষার হলুদ ফুল,
ঘাসের বুকে পড়ে থাকা শুভ্র বকুল।
হঠাৎ করে উড়ে যাওয়া শালিক চড়ুই,
ছায়া দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা শিমুল কড়ুই।
দুহাতে জড়িয়ে ধরবে সবাই আপন করে,
একবার আবার যদি গাঁয়ে যাই ফিরে।