লোকটি মরে পড়ে আছে,
নগরীর ব্যাস্ত ফুটপাতে।
চারপাশে উৎসাহী মানুষের আনাগোনা,
চারপাশে টুকরো টুকরো সমবেদনা।
হাতের ব্যাগে অফিসের চিঠি পত্র, লগবই,
নীল শার্ট গায়ে, অফিসের পিয়ন নিশ্চয়।
পকেটে কাচা হাতে লিখা বাজারের ফর্দ,
তেল, চাল আর একটু এলাচ ও লবঙ্গ।
নিচে লিখা "পারলে গুড়া দুধ, বাবুর জন্য "।

লোকটি মরে পড়ে আছে,
চৈত্রের দুপুরের তপ্ত ফুটপাতে।
একটু দূরেই ছিল লালফুলে ছাওয়া কৃষ্ণচূড়া,
হয়তো সেখানেই বসতে চেয়েছিল সে,
মেলে দিয়ে অবসন্ন পা জোড়া।
বুঝতে পারেনি সে, সময় যে ঘনিয়ে এসেছিল,
বুঝতে পারেনি কিভাবে সব কিছু থেমে গেল।
শেষবার কার কথা ভেবেছিল কে জানে?
হয়তো বড় কর্তাকে ধরতে চেয়েছিল ফোনে,
না কি প্রিয় পরিবারের মুখ পড়ছিল মনে?
তার মৃত মুখে অদ্ভুত এক আতঙ্ক ছড়ানো,
মনে হয় মৃত্যু যেন অফিস ফাঁকি দিয়ে পালানো।

লোকটি মরে পরে আছে,
উৎসাহী জনতার ভীড় বাড়ছে।
পাশে পড়ে আছে দুপুরের খাবারের বাটি,
সবজি, ডিম ভাজি আর তিনটি শুকনো রুটি।
আচ্ছা লোকটির কোনো অসুখ ছিল কি?
এই যেমন হয়তো ডায়াবেটিকের রোগী।
চৈত্রের দুপুরে রোদের তাপের তীব্রতা বাড়ে,
ভন ভন শব্দ করে নীল রঙের মাছি উড়ে,
সদ্য মৃত ব্যাক্তিটির লাশের আশেপাশে।
উৎসাহী জনতার আগ্রহও শেষ হয়ে আসে,
সবাই পা বাড়ায় নিজ গন্তব্যে, মৃদু কোলাহলে।
শুধু বাতাস অপেক্ষা করতে থাকে,
একটি বুকফাটা আর্তচিৎকারে ভারী হবে বলে।
(২৭.০৮.২০২১, ঢাকা)