চিঠি এসেছিল আমাদের গ্রামের
পুরনো জীর্ণ -শীর্ণ ডাকঘরে
বুড়ো পোস্ট মাস্টারের হাতে,
পিওন এসে খোঁজলো ক্ষানিকটা বিরক্ত সুরে
আমি বুঝেছি তাই বকশিস দিয়ে
খুশিও করলাম তারে।


চিঠি এসেছিল অনেক দুরের গ্রাম থেকে
খামের ওপর ঠিকানা দেখে জানতে পারলাম,
কেউ কি আছে! আমাকে চিনে?
আমার নাম,গ্রাম, সব জানে!!
নাকি ভুল করে এসে গেলো কে জানে!
তবুও খুললাম সেই চিঠি খুব সন্তপণে।


চিঠি লিখা কাচা হাতে,শুরুতেই প্রিয় কেমন আছ?
দিনকাল কেমন যাচ্ছে?আমায় কি চিনতে পারছ?
অনেক প্রশ্ন একাধারে করে গেছে সে!
আমি কি বলব কিবা উত্তর দেব!
এসব উত্তর আমার চেয়ে ঢের তার বেশি জানা!
তবুও দীর্ঘশ্বাসে পড়া শেষ হলো চিঠি খানা।


এভাবে প্রতিমাসে আসত তার চিঠি
অপেক্ষার প্রহর গুনতে থাকি,
কখন আসবে পিওন ডাকবে আমায়
বুঝিয়ে দিবে সেই চিঠি।
কত বসন্ত চলে যায়, চিঠির মায়া বেড়ে যায়
চিঠিতে তার গন্ধ শুকি কোমল হাতের পরশ খুঁজি
মনে হতো যেন স্বর্গের সব সুখ হাতে পেয়েছি।


অনেক দিন হলো চিঠি আর আসেনা
হঠাৎ করে বিয়ে হয়ে যায় তার,
তারপর স্বামীর সাথে চলে যায় বিলেতে
খবর নিয়ে জানতে পারলাম
দুর সম্পর্কের আত্মীয়ের কাছ থেকে।
এভাবেই সব কিছু হারিয়ে যায় জীবন থেকে।


এখনো তার চিঠি গুলো স্বযত্নে আগলে রেখেছি
মাঝে মাঝে বাক্স খুলে পড়ি নিভৃতে
তার ছবি ভেসে উঠে মনের আয়নাতে,
দুজনের অনেক স্মৃতিই তখন মনে পড়ে,
চিঠি এসেছিল একদিন আমাদের গ্রামের
পুরনো জীর্ণ -শীর্ণ ডাকঘরে।।