আশ্রয় দিও কাগজের অলিন্দে

আশ্রয় দিও কাগজের অলিন্দে
কবি
প্রকাশনী ইছামতী সংবাদ প্রকাশনি
সম্পাদক জয়দেব বিশ্বাস
প্রচ্ছদ শিল্পী নচিকেতা মাহাতো
স্বত্ব ইছামতী সংবাদ প্রকাশনি
উৎসর্গ জয়ন্ত মণ্ডল
প্রথম প্রকাশ নভেম্বর ২০২০
সর্বশেষ সংস্করণ ১ম
বিক্রয় মূল্য ₹ ১০০
বইটি কিনতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

মানুষ মানুষের মেসে সৃষ্টি-কর্মের মধ্য দিয়ে। তেমনি এক জন সৃজনশীল কর্মী, কবি জয়দেব বিশ্বাস । কবির কাব্যগ্রন্থ "আশ্রয় দিও কাগজের অলিন্দে"পড়তে পড়তে আমার এ কথাই বারবার মনে হয়েছে।এক নিমেষেই কাব্যগ্রন্থটি পড়া শেষ করলাম । শব্দ- চয়ন, চিত্র-কল্প পাঠককে পাঠ দেবে এ বিশ্বাস আমার রয়েছে। বারবার মনে হয়েছে, কবিতাগুলির পরোতে পরোতে কাব্যের অমোঘ টান রয়েছে। ইচ্ছা করলেই কবিতাগুলিকে ছেড়ে ওঠা বা পাশ কাটিয়ে যাওয়া যাবেনা। এবার পথে নামার সময় হল কবিতায়' রক্ত যুদ্ধ বন্ধ হবে কবে ?'যেমন চিরন্তন জিজ্ঞাসা রয়েছে,এ কথার উত্তরও তার কবিতাটির মধ্যে সাবলীলভাবে বিচরণ করছে--' মানবের সাথে চলো পথে নামি প্রতিবাদ - মুখরতা। কাব্যগ্রন্থের শুরুতেই যেখানে এমন একটি চাওয়া- পাওয়াকে ঘিরে, তখন পাঠকমাত্রই অন্বেষক হয়ে উঠবেন--বলার অপেক্ষা রাখে না। যখন কবি বলতে পারেন-' ধর্ম এখানে ঠুনকো নয়, ধর্মই ধর্ষণ বেশ!'বা 'ভুলে যাওয়া ঈশ্বর-আঙিনায় সে কেন বারবার মরে'বা' কর্দমাক্ত পথের দু'পাশে থাকুক ফুলের সুবাস' তখন পাঠককে তার মানবিক মনের হদিশ পেতে বিলম্ব লাগেনা। যেখানে কাঁদা ক্যাচোড়ে ভরা জীবন ,সেখানে
নৈরাশ্য কাটিয়ে কবি খুব আশাবাদী। তাইতো সে বলতে পারে-- 'আজ বৈশাখী ভোরে বেজে উঠুক শাখ্ঁ, জ্বলুক প্রদীপ /আজানের সুর ভেসে যাক অনেক দূর... কিংবা মায়ের চিঠি, শুধু তোমার জন্য, তবু কথা রেখেছি স্বপ্না, একটু বাঁচার জন্য, কবিতাগুলি সুখপাঠ্য শুধু নয়, সেখানে রয়েছে অব্যক্ত কিছু কথা। যে কথাগুলো একান্ত আপন।
কবির কাব্য মনের অন্ধ গলির গোলক ধাঁধায় পড়ে ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন জীবন কাটানো নয়। তাই তার কবিতায় নির্বিঘ্নে বলতে পারে-- 'সেদিন তার দু- চোখে আবিষ্কার হয়েছিল/ ভয়ের এক নতুন সংজ্ঞা, বেঁচে থাকার আত্মবিশ্বাস ।'এই আত্মবিশ্বাসী সৃজনশীল মানুষের সৃষ্টি- কর্ম "আশ্রয় দিও কাগজের অলিন্দে" কাব্যগ্রন্থের প্রায় প্রতিটি কবিতায় যেকোনোভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। এখানেই কোভিদ সার্থকতা। অন্ধকারে আলোর দিশারী হতে চায় তার সৃষ্টি। তাই খুব সহজেই 'সেই রাতের কাহিনী' কবির কলম গর্জে ওঠে-- তুমি এ ভাইরাস- যন্ত্রণা একা কেন সইবে?/ এই সু-সময়ে সঙ্গী ক'রে নিও ওই মধু- লোভীদের ।/একটু ঊঠে দাড়িঁও না হয় আবার।' কিংবা 'একদিন যখন বৃষ্টি হয়ে ফিরব!/ ভিজিয়ে দেবো তোমাকে, তোমার কান্না ধুয়ে যাবে ।/জন্ম হবে আবার আমার বুকে, নিষ্কলঙ্ক রূপে।'কবির কাব্য আশায় আমরাও আশান্বিত ,পাঠক দরবারে সমাদৃত হলে খুশি হব। তার কাব্যচর্চা এগিয়ে চলুক । এগিয়ে চলুক মানুষের বাস্তব সুন্দর জীবনের দিকে।
সমুদ্র বিশ্বাস
(বিশিষ্ট নাট্যকার ও সাহিত্যিক)

ভূমিকা

হাঁটি-হাঁটি, পা-পা ক'রে যে উদীয়মান ভাবুক কবি কয়েক বছর আগে বাংলা সাহিত্যের অঙ্গনে পা রেখেছিল সে জয়দেব বিশ্বাস । তার ক্রমিক পদসঞ্চারণের গতি দেখেই বুঝেছিলাম এই ভীরু পদক্ষেপ একদিন বলিষ্ঠ-সাবলীল হয়ে উঠবে, সাহিত্যের মাটিতে শক্ত ভিত গড়বে । আমার অনুগামী অনুরাগী কুলে জয়দেব প্রায় দু'দশক ধরে সাহিত্য সম্পর্কিত নানা কর্ম-পদ্ধতির মাধ্যমে তার নির্ভেজাল সাহিত্য-প্রীতি প্রমান করতে পেরেছে । ইতোমধ্যে নিজস্ব উদ্যোগে সে প্রতিষ্ঠা করেছে 'সাহিত্য চেতনা' নামক গোষ্ঠী । বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায় সে গোষ্ঠী আজ স্বাবলম্বী তো বটেই, বহুধা-বিস্তৃত করতে পেরেছে আশে-পাশের সারস্বত পরিমণ্ডলকেও ।

এবার আসা যাক শ্রীমানের লেখনির গুণমানের পর্যালোচনায়–

দীর্ঘ ছয় দশক ধরে সাহিত্য সাধনার চেনা চোখে জয়দেব 'বিস্ময়' বলে মনে করি । তার লেখনিতে যেমন আছে বুদ্ধির প্রাখর্য তেমনি ভাষা ও ভাবের সুসংবদ্ধ সৌকর্য । এ সাহিত্য সেবী অনুশীলনের মাধ্যমে একদিন কাব্যলক্ষ্মীর জয়মাল্য লাভ করবে এ বিষয়ে আমি নিঃসন্দিগ্ধ । শ্রীমানের প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'আশ্রয় দিও কাগজের অলিন্দে' অরুণ প্রভাতের স্নিগ্ধ আলোয় রঞ্জিত হয়ে এগিয়ে চলুক উজ্জ্বল মধ্যাহ্নের দিকে কামনা জানাই ।

গোবিন্দ পান্তি
(বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিক ও সম্পাদক)
২২.০৯.২০২০