বহুদিন গ্রাম ছাড়া আমি, হঠাৎ এসেছি ফিরে।
                     প্রায় বছর ত্রিশ পরে।।
অবাক চোখে দেখি
আমার সে গ্রাম তো সে গ্রাম নেই একি;
গ্রাম ছাড়া মেঠো পথ হয়েছে অন্তর্ধান
মাটির বাড়ীর সামনে গোবর নেকানো উঠান
হরিধ্বনির সাথে সাথে খোল করতালের বোল
ফাঁকা মাঠে খালি গায়ে হা ডু ডু খেলার গোল
এক্কা দোক্কা খেলে না খোাকাওখুকিরা
ডাঙ্গুলির মেলা হারিয়ে বসেছে ক্রিকেট পসরা
তাসের বদলে ওখানে এখানে বসে মদের আসর
অধিক রাতে রঙ্গে ভাসে নিত্য বাসর
জুয়ার আড্ডা চলে সকালে ও বিকালা
দোকান হয়েছে পথের ধারে যেন মেলা
ভোরে যায় না গরুরপাল গোঠে
রাখাল বালক আর দেখা যায় না মাঠে
লাঙ্গল বদলে মাঠে ট্রাক্টর ঘুরে
মন্দির চাতালে বসে না সভা গ্রামের বিচারে
সন্ধ্যায় সেথা জ্বলে না প্রদীপ তুলসি তলায়
শোন যায় না শঙ্খধ্বনি সকাল বিকাল
রাতের আঁধার আজ আলো ঝলমল
জোনাকি ঝোলায় না গাছে রোশনাই মখমল
শিয়ালেরা ডাকে না প্রহরে প্রহরে
রাতে পেঁচার ঘুৎকার নেই গাছের কোঠরে
কোথায় চলে গেছে কোকিল টিয়া বাবুইর দল
জাম কঁতবেল আর খেজুরের হরেক রকম ফল
হাজার রকম ফলফুল গাছ ছিল গ্রাম ভরে
গাছপালা শূন্য আজ, ধূ ধূ করে চারিধারে
সন্ধ্যা বেলায় শোনা যায় না মায়ের ডাক
মোবইলে খোঁজ খবর চলে রেখে রাখঢাক
সরলতা মানবিক মুখ বদলে এসেছে ক্রূরতা
সাহায্যের হাত কারো নেই, ফুটে উটেছে হিংস্রতা
স্বার্থের তরে মারামারি করে নিজের ভালোটা বোঝে
অন্যেরা যাক রসাতলে নিজের সুযোগই খোঁজে
একান্নবর্ত্তী পরিবার একটিও নেই ভাই ভাই ঠাঁই ঠাঁই
সুখদুঃখে কেহ নেই কাছে, নিজের সবই চাই
অতিথি এখন দেবতা নয়, সকলে সকলের শত্রু
সুন্দরী বাংলা এখন অনৈতিকার ফলে হচ্ছে গলদশ্রু