এখন প্রকাশ্য উপাসনা, আলোচনা করে মুসলমান
ইসলামে দীক্ষিত ইতিমধ্যে ধনী ব্যাবসায়ী ওসমান।
মক্কাবাসী কোরাইশরা ধীরে ধীরে বুঝে নেয় বেশ
ইসলাম অপ্রতিরোধ্য, নাহলে স্বয়ং মুহাম্মদ শেষ।


আবু জহল করে তাই এক মহাপুরস্কার ঘোষণা -
একশত উট আর এক হাজার আউন্স সোনা
সেই পাবে, মুহাম্মদের মস্তক এনে দেবে যেজন -
পেতে তা লুব্ধ হলো তারই ভাগ্নে, ওমরের মন।


তেত্রিশ বছরের যোদ্ধা ওমর, হাতে খোলা তলোয়ার
ছুটে চলে মুহাম্মদের মাথা এনে পেতে পুরস্কার।
পথিমধ্যে দেখা হয় সদ্য মুসলিম, সাদের সাথে
জানলে তা ওমর, সাদও খুন হতো ওমরের হাতে।


তবুও সতর্কের বাণী দেয়, শোনায় ওমরকে সাদ -
করো না ওমর তুমি এহেন জঘন্য ঘৃণ্য অপরাধ।
খোঁজ নাও আগে তোমার নিজ ভগ্নী ও ভগ্নী-জামায়
ইসলামের ছায়াতলে আজ মুহাম্মদের কলেমায়।


এ খবরে ওমরের মগজে যেন জ্বলে ওঠে আগুন
তাই যদি সত্যি তবে ওরাই হবে সব আগে খুন।
তলোয়ার হাতে ছোটে ওমর ভগ্নী-ভগ্নীপতির ঘরে
যেয়ে শোনে খাবাব বসে কোরানের আবৃত্তি করে।


বোঝে ওমর, খাবাব কোরান শেখায় বোন আমিনাকে
ভগ্নীপতি সায়ীদও শিক্ষা নেয় কোরান, অনুসারি’ তাকে।
সায়ীদ ও ওমরের মধ্যে শুরু হয় ধাক্কা- হাতাহাতি  
ওমরের তলোয়ারে বিদীর্ণ হবে বুঝি সায়ীদের ছাতি।


স্বামীর প্রাণ রক্ষায় মাঝখানে তাদের, ভগ্নী ছুটে আসে
ওমরের প্রচণ্ড চড়ে আমিনার গাল লাল রক্তে ভাসে।
প্রচণ্ড ব্যথায় কেঁদে উঠে আমিনা, দেয় চিৎকার -
খাত্তাবের পুত্র! আমিও মুসলমান, করো যা ইচ্ছা তোমার।

সহসা ওমর যেন কিছুটা সম্বিত ফিরে পায়
লজ্জিত হয় নিজের ভগ্নীর এ হেন অবস্থায়।
দাঁড়িয়ে সে বলে আমিনাকে, পড় শুনি কোরান
সুরা তাহার চোদ্দটি আয়াতে গলে ওমরের প্রাণ।


জীবনে সে শোনে নাই এমন মধুর বাণী, মধুর ভাষায়
স্বর্গীয় আলোর ছটা যেন বিমোহিত হৃদয়কে হাসায়।
যে দম্ভে এসেছিল ওমর মনে নিয়ে ক্রোধের আগুন
সব তার নিভে যেন হলো নিস্তব্ধ, শীতল তার খুন।


দেহ তার কাঁপে থরথর যেন আর নেই নিয়ন্ত্রন
বলে, নিয়ে চলো আমাকে, করি এ ইসলাম গ্রহণ।
আমিনা, সাদ, খাবাব ও ওমর - এই চারজন
মুহাম্মদের সাক্ষাতে আরকামের গৃহে করে গমন।


দ্বারে দণ্ডায়মান হামযাহ ঘরে যায় ওমরকে সাথে
ঘরে গেলে নবীজি নেয় ওমরের হাত নিজ হাতে।
দয়া ও মধুর পরশে ছুঁয়ে নবীজি বলে, ও ওমর!
হবে না ক্ষান্ত তুমি না এলে গজব তোমার ওপর?


হতবাক ওমর কাঁপে থরথর যেন নিয়ন্ত্রন হারা
উচ্চারণ করে: নেই অন্য উপাস্য এক আল্লাহ ছাড়া,
মুহাম্মদ নিশ্চয়ই আল্লাহর রসুল - সংবাদ দাতা -
মুহুর্তে ইসলামের দুশমন হলো মুসলমানের ভ্রাতা।