মধ্যে মাঝেই মনটা বলে, ঘরখানা আজ পুড়িয়ে দিই
খাঁচায় রাখা পাখিটাকে, হঠাৎ করেই উড়িয়ে দিই।
একতারাটা হাতে নিয়ে, অচিন পথে বেরিয়ে পড়ি
চৈত্রদিনের দমকা হাওয়া, জড়িয়ে বুকে বন্ধু গড়ি।
বাউল গানের উদাস সুরটা, তার পিঠেতেই চড়িয়ে দিই
ঘুর্ণিঝড়ে উড়ছে যা সব, বুকের মাঝে জড়িয়ে নিই।


ঘুর্ণি হয়ে চূর্ণি' যাবো গাছের যত শুকনো শাখা
থামবো উদাস বউয়ের হাতে, ক্ষণিক হবো তালের পাখা।
ভর-দুপুরে আলগা বুকে, আমায় রেখে দিলেই ঘুম
দেখবো চেয়ে এদিক সেদিক, সবখানেতে যেই নিঝুম -
উড়াল দেবো চড়ুই হয়ে ঘুলঘুলিটার ফোকর দিয়ে
হারিয়ে যাবো দূর আকাশে, সূর্যটাকে ঠোকর দিয়ে।


ডুববো পড়ে নদীর বুকে, শীতল জলে তৃপ্ত হতে
ডুব সাঁতারে জল ঘুলিয়ে, জল পাঠাবো আকাশ পথে।
মেঘ হয়ে তা কাঁদবে যখন, আসতে আবার ধরার বুকে
বৃষ্টি হয়ে আসবো নেমে, ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরার সুখে।


হাত মিলিয়ে পাতিয়ে দেবো, মেঘ বাতাসের সুখ-মিতালি
রঙধনুকে শুনিয়ে দেবো, বাউল সুরের ভাব-গীতালি।
গেরুয়া রঙের রঙটি দেখে, রঙধনুটা হাসবে যখন
নদীর বুকে বিদায় রবির লাল-রাঙা মুখ ভাসবে তখন।


সাঁঝের আগে প্রাণের টানে, সবাই যখন ফিরবে ঘরে
অনড় আমি নদীর তীরে, থাকবো বসে ঘাসের 'পরে।
দেখবো তখন জলের তলে, চাঁদ-তারাদের নাচানাচি
সুখটা তখন নাচবে এসে, আমার বুকের কাছাকাছি।
কার দু'খানা করুণ নয়ন, ডাকবে ঘরে আয় রে আয়
ভাববো, ওরে বাউল মন! চাইলেই কি ঘর ছাড়া যায়?