প্রথম যেদিন একটি ভ্রূণ আসে মাতৃ-জঠরে
সবার অলক্ষ্যে ফুটে ওঠে হাসি সে মায়ের অধরে।
তারপর মায়ের কত না ত্যাগের মাঝে
কত না যন্ত্রনা সয়ে দিন-রাত, সকাল-সাঁঝে
দশমাস পর একটি শিশুর মাতৃক্রোড়ে হয় আগমন
চরম বেদনা ভুলে আনন্দে ভেসে যায় সে মায়ের মন।


এক মহাকবি, একদিন মন্ত্রমুগ্ধ উচ্চারণে
একটি স্বপ্নের ভ্রূণ বুনেছিল সাতকোটি বাঙালীর মনে।
তারপর মহাত্যাগের যন্ত্রনায় বারবার
লক্ষ মায়ের বুকে উঠেছে আকাশ-বিদারী হাহাকার।
হায়েনার সুতীক্ষ্ণ নখের আঁচড়ে
ক্ষত-বিক্ষত লাখো সন্তানের বলিদান মায়ের চরণ 'পরে।
অতপর, দশমাস মহাত্যাগ, মহাযন্ত্রনার শেষে
একটি নবজাতকের প্রথম কান্নায় দেশমাতা উঠেছিল হেসে।


সেদিন শীতের কুয়াশা ভেদি উজ্জ্বল আলো নিয়ে উঠেছিল সূর্য
দশমাস নির্বাক পাখিরা, বনে বনে, গানে গানে বাজালো বিজয়-তূর্য।
রক্তমাখা বেদনায় থেমে থাকা পদ্মা-মেঘনা-যমুনার জল
মহানন্দে সমুদ্রের পথে বাধভাঙা স্রোতে আবার হয়েছিল উছল।
শীতের সমীরণ ভালোবাসার উষ্ণতায় গিয়েছিল শৈত্য ভুলে
চরম আস্থায় মা তার সদ্যজাত সন্তানকে চোদ্দ কোটি হাতে দিয়েছিল তুলে।


মাগো, তোমার সেই সেদিনের বিজয় আজ পূর্ণ সুপুরুষ, দুর্বার
আজ তার জন্মদিনে বত্রিশকোটি হাত পূর্ণ-প্রতিজ্ঞায় ঊর্ধে মুষ্ঠিবদ্ধ আবার।