বন্যা এসেছে ঘর  ভেসে গেছে ভেসেছে মানুষ গরু
ডুবেছে রাস্তা উবেছে আস্থা খুবেছে ফসল তরু।
দূর সীমানায় যত দেখা যায় জল করে থৈ থৈ
আজি কে কোথায় সলিলে হারায় কেউ খোঁজে কই কই।


সাপ ও নেউলে ঢেউয়ে দুলে দুলে ভেসে যায় একসাথে
বিড়াল ও কুকুর সকাল দুপুর খায় বসে একপাতে।
আবক্ষ জল হাঁটে দুর্বল কাদামাটি পায়ে টানে
পিছলালে পা নিয়তির ঘা লাগে শেষবার প্রাণে।


সবলে ছোটে উঁচুতে ওঠে গাছে, ছাদে, খড়ো- চালে  
শিশু ও নারী রুগী অনাহারী ভেসে যায় নদী, খালে।
এতো জল তবু মেলেনাকো কভু পিপাসাতে মুখে জল
ভেজে বৃষ্টিতে বোবা দৃষ্টিতে, হারিয়েছে সম্বল।


ক্ষুধার আহার জোটেনা বাছার চোখে ওঠে ব্যথা ফুটে
ক্ষুধার জ্বালায় লজ্জা পালায় খেতে চায় নিজে লুটে।
কত দিনরাত দিয়েছে যে হাত আজি তা শূন্যে পাতে
জলেতে দাঁড়িয়ে গলাটা বাড়িয়ে খেতে চায় নুনে-ভাতে।


আসে যত ত্রাণ কাহাদের দান লেখা থাকে তার গায়ে
প্রতিবেদকেরা, ভিডিও ক্যামেরা যন্ত্র-চালিত নায়ে -
হুংকার ছাড়ে দলের ব্যানারে ভালো ছবি চায় নেতা
যাহা কিছু দেয় তার কিছু নেয়, ভাবে কাল ভোটে জেতা।


টিভির খবর জমেছে জব্বর - দলনেতা গুণে ভরা
খবরের চেয়ে স্তবক গেয়ে নেতাদের খুশি করা।
বিশেষজ্ঞের তথ্যযজ্ঞের জল-ঘোলা রাজনীতি
জলে ডুবে যায় তবু জল চায় - আহারে কী জল-প্রীতি!


কে আছিস ওরে বলি আজ তোরে থাকে যদি একমুঠি
তাই নিয়ে আজ সেবক তো সাজ পাশে দাঁড়া গিয়ে ছুটি'।
ক্ষুধার আহার জল পিপাসার তুলে দে ওদের মুখে
ভাঙা যে হৃদয় চায় প্রত্যয় আর আশা চায় বুকে।


নদী যেথা হতে ছুতে আসে স্রোতে সেথা কে দিয়েছে বাঁধ?
খরা-মৌসুমে জল নেই ভূমে নদীতে আর্তনাদ।
জীবন ধুকায় নদীরা শুকায় মরে তার গভীরতা
বর্ষার জলে বাঁধ খোলা হলে, বহনে অক্ষমতা।
দুকূল ছাপিয়ে দাপটে দাপিয়ে ভাসায় ঘর ও মাঠ
পশুদের পাশে মানুষও ভাসে, ভাসে দোকান ও হাট।


আয় তবে আয় আজ বলে যায় এ সব মানি না আর
চাহি না যাহা রাখি না তাহা ভেঙে করি চুরমার।
ওরে নয় আর শুধু হাহাকার, মরা শুধু মুখ বুজে
বিধাতার নদী কেউ বাঁধে যদি, মারি তাহাদের খুঁজে।


বিশেষজ্ঞের কথা-যজ্ঞের শেষ হোক আজ পালা
মুক্ত নদী চাই নিরবধি - হাতুড়ী, শাবল চালা।
কে শোনে কে তারা? যা দেয় নেতারা ছুড়ে ফেল বন্যায়
মরেছি তো আগে সেই মরা রাগে আজ মারি অন্যায়।