রফিক ও সালাম, বরকত, জব্বার
অনেক প্রিয় কাল, ছিলে যে সব্বার।
বুকের রক্ত ঢেলে, রাজপথটা ভরে
মায়ের ভাষা গেছো, ঠিকই রক্ষা করে।
ফুলের মালায় কাল, ঢেকে নিলে বুক
গানের সুরেও পেলে, অনেক অনেক সুখ।


আজ সকালে মায়ের, পেলাম চরমপত্র
নগ্ন দেহে তার, চায় মোটা এক বস্ত্র
ক্ষুধার পেটে চায়, নুন আর শাক ভাত
নইলে শুধু মা ডাক, তার কাছে উৎপাত।


শূন্য পকেট নিয়ে, গেলাম শহীদমিনার
ফুল বেচে তার কিছু, হয় যদি এক কিনার!
হাত বাড়াতেই ফুল, দিলো যে চিৎকার
তাদের ভেতর কেউ, পবিত্র নেই আর
একটি ফুলের ছোঁয়ায়, সবাই অপবিত্র
পাঁপড়িতে তার দেখি, বোনের রক্ত-চিত্র।  


সাংসদের পুত্র, বোনের ধর্ষণকারী
ফুলের রং ও গায়ে, রক্ত দেখি তারই।
ছুঁয়ো না আমায়, তার আঁকুতি শুনি
বিচার চেয়ে মৃত, আজও যে দিন গুনি।  
পিতার অর্থবলে, সারা শহর কাঁপে
সালাম ঠোকে তারেই, সকল মেয়ের বাপে।


লজ্জানত মাথা, ভাবছি বসে আজ
তোমাদের এ ভাষা, করেই বা কী কাজ?
এই ভাষাতে বলো, বলা কী আজ যায়
যেই হোক সে দোষী, দোষীর বিচার চাই?
বাপ্ ও বেটা গোনে, হাজার কোটি টাকা
দোষীর তালিকাতে, তাদের নামটা ফাঁকা।
তোমরা রেখে গেলে, এ কেমন এক ভাষা
দোষীর বিচার চাই, বলার নেইকো আশা।


রাষ্ট্র লেখে দলিল, তারাই নীতিবান
আধেক পরিবারের, বিদেশ-অবস্থান
স্বদেশ বসে তাদের, করেন ভরণ-পোষণ
নেইকো নাকি তাতে, দুর্নীতি বা শোষণ।
দেশ বিদেশের ব্যাংকে, জমুক যতই টাকা
দুর্নীতির বিচারে, দোষ নয় এসব থাকা।


মায়ের ভাষায় শুধু, মা মা সারা জীবন
অবোধ শিশু মায়ের, করে থাকে যেমন?
নগ্ন দেহে ক্ষুধায়, লাগে না মা'র ভালো
কর্মবিহীন ভা'য়ের নেই জীবনে আলো
মেধা-ভাষা যার, শুধুই আবর্জনা
ঘুষবিহীন চাকুরী, দেয় তারে কোনজনা?
দক্ষ পিতা যাদের, ঘুষ নিতে ও দিতে
তাদের আছে শুধু, যোগ্যতা চাকুরীতে।


তোমাদের এই ভাষায়, এসব যদি কহি
আখ্যা পেতেই পারি, সন্ত্রাসী-দেশদ্রোহী
ঝুলতে পারি কালই, ফাঁসির কালো কাঠে
হারিয়ে যেতে পারি, অজানা এক মাঠে
নয়তো কোন এক কোর্ট, বলতে পারে রায়ে  
দশ বছরের জেল, ছুঁলেই স্বদেশ পায়ে।