এসো হে বৈশাখ, সাথে নিয়ে নতুন বছর
বাংলার ঘরে ঘরে নিয়ে এসো নতুন খবর।


নিরন্নের উনুনে আনো ফুটন্ত ভাতের সুবাস
পান্তা-ইলিশ যেথা নিতান্তই ভ্রান্তি-বিলাস -
নিয়ে এসো মুঠো ভর্তি কাঁচা লঙ্কা, সাথে নুন
কলমির শাকে সরিষার তেল, পেঁয়াজ-রসুন।
নিয়ে এসো জলসিক্ত চাল-ডালে গুড়ের মিষ্টি
নিয়ে এনো বীজ বোনা জমিতে সময়ের বৃষ্টি।
নিয়ে এসো কিষান বউয়ের গায়ে তাঁতের শাড়ি
কেড়ো না বৈশাখী ঝড়ে তার ছোট্ট সুখের বাড়ি।
নিয়ে এসো ক্ষেতে তার সোনালী ফসলের বান
গাছে গাছে আম, কাঁঠাল আর কণ্ঠে পল্লীগান।


নিয়ে এসো নগরের বস্তিতে মানুষের অন্তরে
আগামীতে মর্যাদায় বাঁচার স্বপ্ন, জীবনের মন্তরে।
শীর্ণ-ক্ষীণ তনুতে প্রাচুর্যের বসন দুর্লভ বাসনা
আটপৌরে ভূষণে লজ্জা ঢেকে তৃপ্তিতে হাসো না!
এনো তাদের পোশাক যারা খাটে পোশাক কারখানায়
বর্নাঢ্য পোশাকী নৃত্যে পোশাকহীন তাদের কি মানায়?
তোমার বর্ণিল আগমনকে স্বাগত জানানোর তরে
পরিচ্ছন্নতার অভিযান হবে নগর, ফুটপাথ ও ঘরে
ফুটপাথের আজন্ম সম্রাটগন হবে উচ্ছিন্ন, গৃহহারা  
নিত্যকার অবাঙালী, বাঙালীর নৃত্যে হবে আজ সারা।
কণ্ঠে, কণ্ঠে গীত হবে, এসো, এসো হে বৈশাখ!
পংকিল আবর্জনা, যাক উড়ে, হোক পুড়ে খাক।


প্রাচুর্যের স্বর্গে আজ বঞ্চিত মানুষেরা নোংরা জঞ্জাল
উড়াবে কি? পুড়াবে কি তাদের সব শ্রীহীন কঙ্কাল?
হে রুদ্র, দুর্দম, যদি চাও পুড়াতে, যদি আনো ঝড়
পুড়াও, আর মিশাও ধুলায় যে সমাজ করে নড়বড়।
সমতল ভূমিতে হোক আবার তার নতুন পত্তন
বঞ্চিতের বুকে নয় শোষকের প্রাচুর্যের নগ্ন-নর্তন।
শুধু নতুন বছর নয়, এসো, এসো হে নতুন বৈশাখ
আজ দিকে দিকে সংখ্যালঘুর প্রাচুর্য পুড়ে হোক খাক।