ধর্ম-কথায় ফড়ফড়ানি, কর্মেও দোড়াদোড়ি
হালাল মাংস কেনার কথায় দারুন কড়াকড়ি।
কেনার পিছে অর্থটা যে সেটার বেলায় কানা
যেখান থেকে আসুক সেটা নেইকো নিতে মানা।

এই যদি হয় ভাবনা তোমার, শোন মুসলমান
ইসলামের যে আসল কথা দাওনি তাতে কান।
হারাম অর্থের ভোগ-বিলাসে করতে পারো আরাম
হারাম দিয়ে যা কিছু পাও সব তবু তার হারাম।

হারাম অর্থের আহার-পানে হারাম হলে রুজি
এবাদতেও পুণ্য যে নেই - যতই মরো খুঁজি।
হারাম রুজির উত্সগুলো তাই তো জানা চাই
অর্থে ক্ষতি হোক না যতই, তবুও মানা চাই।

ঘুষের অর্থ যেজনে নেয় তারই হারাম নয়
দাতার তরেও ধর্ম শোনায় নরক বাসের ভয়।
অন্যের যা - জোর বা ফাঁকি যেমনভাবেই নেবে
ভক্ষণে তা দেহে তোমার হারাম রক্ত দেবে।


জনগণের সেবার তরে যারা ক্ষমতায়
রাষ্ট্র থেকে নির্ধারিত বেতন-ভাতা পায়।
সুযোগ বুঝে তারও বেশী করলে আত্মসাত
যেমনভাবেই যুক্তি দেখাও হারাম তা নির্ঘাত।

শরীকানার সূত্রে পাবে যে যতটুক অংশ
তা না দিয়ে ভক্ষণে তা ধর্ম হবে ধ্বংস।
বাবা-মায়ের সম্পত্তিতে বোনের যেটুক ভাগ
পাওনা হলেই দেবে সেটুক না দেখিয়ে রাগ।

পাওনা দিয়ে ঘটাও যদি সম্পর্কতে ছেদ
রক্তের যে বাঁধন তাতে আনলে ভেদাভেদ
তোমার তরে বন্ধ রবে বেহেস্তেরই দ্বার
আপন করে ডাকবে তোমায় ঘোর নরকের নার।

হারাম মাল ও হারাম সেবার ব্যাবসাতে যে আয়
কিংবা যদি ঠকাও ক্রেতা হালাল ব্যবসায়
কিংবা চাষের জমির আইল ইচ্ছা করে ঠেলো
জেনে রেখো হারাম আয়ে ধর্ম তোমার গেল।

শূরের মাংস, মানব মাংস, প্রবাহমান রক্ত,
সুদের অর্থ হারাম এবং নিষেধবাণী শক্ত।
একই রকম হারাম হবে হালাল যত খাদ্য
হারাম অর্থে কিনলে, কিংবা মিশলে তাতে মদ্য।

এমন যেসব ঘটে গেছে ভুলে অতীত-দিনে
তওবা করে আল্লাহর কাছে লজ্জা-দ্বিধা বিনে
যার পাওনা ফিরিয়ে দিয়ে করে সেসব বর্জন
সঠিক পথে ধর্ম করে হোক বেহেস্ত অর্জন।
-----------------------------
** 'ঐশী আলোর ছটা' কাব্যগ্রন্থের জন্যে