এমন ব্যস্ত ছিলাম জীবনে - মরার ছিল না সময়
মরণ এসেছে সময় করে তাই হয়ে বড় সদয়।
সেই বন্ধুর খাতিরে আমায় নিয়েছে এখন গোসলে
ফুলের পাপড়ি ও আতর মাখানো সুগন্ধীময় জলে।


বিদায় কালে আজ আর কেউ করবে না সাবধান
চলার পথে রাখি যেন খুলে সর্বদা চোখ-কান।
বন্ধু এনেছে এমন আজব চাকাহীন এক গাড়ি
সেটাতে চড়েই অপরের কাঁধে ছেড়ে যাব আজ বাড়ি।


কারো চোখে জল বিদায় ব্যথায় অঝোর ধারায় বহে
কারো চাওয়া আর হবে না পাওয়া, তাই অন্তর দহে।
কারো অন্তর বেদনা বিহীন, বদনে ব্যথার ভান
সব হারিয়ে কারো হয়েছে শোকেতে পাথর প্রাণ।


জীবনে যারা শত্রু ছিল আজকে তারাও এসে
জানায় বিদায় নীরব বদনে পরম বন্ধু বেশে।
কোনদিন যারা দেয়নি সামনে, দেখায়নি সম্মান
আজকে তারা পেছনে হাঁটে দেহে নেই যেই প্রাণ।


ধীর গতিতে হবে আজ যাওয়া, ব্যস্ততা আজ নেই
সকল কর্ম ছেড়েছি আজ সে বন্ধুর খাতিরেই।
যাওয়ার পথে দেখে যাব আজ বিদ্যালয়ের মাঠে
যেমন হেঁটেছি - কত ছেলেমেয়ে আজও কি তেমন হাঁটে?


আজও তেমনি ঘাসগুলি সব শিশিরে রয়েছে ভিজে
যার বুকে বসে অনেক সকালে আমিই ভিজেছি নিজে?
আজও কি তেমনি আমার মতই পথপাশে বসে মাচায়
গল্পে ব্যস্ত পাড়ার ছেলেরা দুলিয়ে দুপা নাচায়?


আজও কি তেমনি পথের পাশে গাভী ঘাস খাওয়া ভুলে
হাম্বাস্বরে বাছুরে ডাকে ব্যাকুল নয়ন তুলে?
আজও কি তেমনি কারো চোখে চোখে মন হলে বিনিময়
নতুন ঘরের স্বপনে আকুল মনে অনুভূতি বয়?


পথের মোড়ে মসজিদে দেয়া আছর-আযান শুনে
সূর্যাস্তের আভায় রাঙা গাছে গাছে পাখি গুনে
গাঁয়ের প্রান্তে মাঠের শুরুতে মাটিতে ধুলার ঘরে
বন্ধুর সাথে নিদ্রায় রবো অনন্ত কাল ধরে।


ক্ষেতের সোনালী ফসল থেকে বয়ে আসা মৃদু বাতাস
আমার সে ঘরে নানান ফুলের ছড়াবে নিত্য সুবাস।
কোন একদিন আবার জাগার আসবে যখন ডাক
নিমেষে সময় কেমনে গেল - জেগে হব ভেবে অবাক!