যুদ্ধ ছিল গাঁয়ে, যুদ্ধ ছিল শহরে, বন্দরে
যুদ্ধ ছিল দেহে, যুদ্ধ ছিল বাঙালীর অন্তরে।
যুদ্ধ ছিল মাঠে, যুদ্ধ ছিল নদী, নালা, জলায়
যুদ্ধ ছিল লেখায়, যুদ্ধ ছিল গানে, কথা বলায়।


যুদ্ধ ছিল ঘরে, যুদ্ধ ছিল ধান, ফসলের ক্ষেতে
যুদ্ধ ছিল হাটে, যুদ্ধ ছিল ঝোপ, ঝাড়ে ওঁত পেতে।
যুদ্ধ ছিল দেশে, যুদ্ধ ছিল সীমান্তের ওপারে
যুদ্ধ ছিল সর্বত্র, দুই বাংলার পথের ধারে ধারে।


যুদ্ধ ছিল রুগ্ন ছেলের শয্যাপাশে মায়ের
যুদ্ধ ছিল লাশ বুকেতে মা, বাবা ও ভা'য়ের।
যুদ্ধ ছিল ক্ষুধার, যুদ্ধ ছিল নগ্নদেহে শাড়ির
যুদ্ধ ছিল খড়ের চালে আগুন দেওয়া বাড়ির।


যুদ্ধ ছিল মা, মেয়ে ও বোনের লজ্জা রাখায়
যুদ্ধ ছিল জলের উপর নাক ভাসিয়ে থাকায়।
যুদ্ধ ছিল মৃত্যু জেনেও প্রাণের টানে ছুটায়
যুদ্ধ ছিল মরার আগে, মারার তরে উঠায়।


অস্ত্র ছিল বাঁশের লাঠি, চাষীর কাস্তে, কোদাল
অস্ত্র ছিল জয়বাংলা, হস্তে গাছের ডাল।
অস্ত্র ছিল মনের সাহস, বর্বরতায় ঘৃণা
অস্ত্র ছিল প্রত্যয়টা, স্বাধীন হব কি না!


যোদ্ধা ছিল বীর সেনানী, পেশাজিবী, বোদ্ধা
ঘরের বধূ, যুবক, যুবা সাহসী বীর যোদ্ধা।
যোদ্ধা ছিল মা বোনেরা, বাইরে ঘরে ভাবী
মিটিয়েছিল মুক্তিযোদ্ধার তৃষ্ণা, ক্ষুধার দাবী।


যোদ্ধা ছিল বকুল, কালু, গাঁয়ের রাখাল ছেলে
যোদ্ধা যারা খবর দিতো পাক সেনারা এলে।
যুদ্ধ ছিল ঘরে বাইরে সবখানেতে জেতার
যুদ্ধ ছিল প্রাণ বাঁচানো বন্দী থাকা নেতার।


যুদ্ধ ছিল সবাই মিলে একটি ফুলকে বাঁচানো
যুদ্ধ ছিল বিজয়ানন্দে বাঙালীর মন নাচানো।
যুদ্ধ ছিল লাল সবুজের পতাকাটা আনার
যুদ্ধ ছিল বিজয়দিবস কবে হবে জানার।


বিজয় দিবস আনলো যোদ্ধা, শহীদ, বীরাঙ্গনা
বিজয় দিনে আর কারো নয়, তাদেরই বন্দনা।