মাঝে মাঝে মনে হয়, সারাক্ষণ মেতে আছি কী এক নেশায়
সবকিছু নিবিড় করে বুকের মাঝে মেশায়।
মিশে যাই ধুলো, মাটি, কাদার প্রতিটি কণায়
মিশে যাই আকাশের অগণিত তারাদের গণনায়।


মিশে যাই শীতল পরশে নদীর নিস্তব্ধ জলে
বয়ে যাক ফল্গুধারা বিগলিত হৃদয়ের তলে।
সমস্ত বৃক্ষ, লতা, গুল্ম, পত্র এ অঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে রাখি
পাখিদের সাথে বসে বিচিত্র সুর এই কণ্ঠে ডাকি।


নিবিড়ভাবে শুষে নিক নাসিকা পৃথিবীর প্রতিটি ফুলের সুবাস
নিবিড়ভাবে স্বাদ দিক জিহবায় আম, জাম আর কাঁঠালের শাঁস,
নারিকেল, কলা, আমড়া, পেয়ারা, আপেল, আঙ্গুর, নাশপাতি, লিচু
নাম না বলা আরও হাজার ফল আছে যতকিছু।


মন চাই নিবিড়তায় ছুঁয়ে দিই খন্ড, বিখন্ড নরম মেঘ
অঙ্গের প্রতিটি লোমকূপে কাঁটা দিক বয়ে যাওয়া বাতাসের বেগ।
বুকের মাঝে বেজে উঠুক নদীর স্রোতের কুলুকুলু ধ্বনি
ডেকে যাক বহুদূরে কাউকে নিবিড় করে পাওয়ার সম্মোহনী।


শুধু যা কিছু চলে যায়, রেখে যায় বুকের নিবিড়তায় শূন্য কিছু স্থান
যা কিছু আছে তাই দিয়ে ভরে নিতে ব্যাকুল হয় প্রাণ।
কিছু কিছু নিবিড় বুকের স্পর্শ আজ আর নেই
কিছু কিছু নিবিড়তা বেঁচে আছে স্মৃতির চুম্বনেই।


বাতাস ও স্রোতের মতো যারা আজ বেগবান
সময়ের পথে গেয়ে চলে অবিরাম জীবনের গান
চায় না তারা থেমে যেতে আবেগসিক্ত এই নিবিড়তায়
চাই না আমিও আমার এই নিবিড় বুকে ওরা থেমে থাক জড়তায়।


শুধু চাই ওদের ক্ষণিকের স্পর্শ - গভীর, সুনিবিড় -
বাকিটা সময় যা বুকের মাঝে করে রবে ভীড়।
তারপর একদিন কিছুটা শূন্যতা রেখে সেই ভীড়ে
ফিরে যাবো একদিনের ফেলে আসা নীড়ে।


নিবিড় স্পর্শে শুয়ে রবো সে নীড়ের মাটিতে অনন্ত কাল
দিয়ে যাবো কারো কারো হাতে নিবিড়তার সে মায়াজাল
জগতের কোনকিছু যেন কোনদিন
নাহয় ক্ষণিকের তরে নিবিড় ভালোবাসাহীন!