হে বিদ্রোহী, হে বঞ্চিত, হে দরিদ্র, হে নিঃস্ব
তুমি বিশ্ব-কবি নও, তুমি কবিতার বিশ্ব।
তুমি ভারত-মাতার অগ্নি উদগারী প্রতিবাদী ড্রাগন
স্তুতি নয়, অগ্নি-ছন্দে তুমি সত্যের নির্ভিক উচ্চারণ।


তুমি সাম্রাজ্যবাদী শোষকের দর্প-সংহারী
ফুলমাল্য পদ দলি তুমি শিকলাবদ্ধ কারাগারী।
জমিদার নও, ভূমিহীন, বাঁচার সংগ্রামে দৈনিক -
কাব্যকুঞ্জে নও - জীবনের রণভূমে বীর-সৈনিক।


তুমি অন্যায় সংহারক, ন্যায়ের মুয়াজ্জিন
তুমি চির-চঞ্চল, ধ্বংস-সৃজনে মুক্ত, স্বাধীন।
তুমি ধার্মিক, তবু নও জাতি-ধর্মাবদ্ধ
তুমি ভন্ড ধার্মিকের কণ্ঠে কাঁটা, করো স্তব্ধ।


তব দৃপ্ত-কন্ঠে গীত সব ধর্মের সহাবস্থান
ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-হীন মনুষ্য সাম্যের গান।
তুমি অগ্নিবীণা, দোলনচাপা, ক্ষণজন্মা-ধুমকেতু
বিশের বাঁশিতে চক্রবাক-চক্রবাকির প্রেম-সেতু।


তোমার ছন্দে বিশ্ব-নবী হলো মরু-ভাস্কর
তোমার হামদ ও নাত চলে রমজান মাস-ভর।
ঈদ ও পূজায় সমানে বাঁজে তব সুর-ঝংকার
তোমার সহস্র গীত-সঙ্গীতে সহস্র সুর-সমাহার।


তব ছন্দ-সুরে বঙ্গভূমি নিত্য মুখরিত
মূকেরে মুখর করি, শেষে তুমি বাক-রহিত।
তুমি বাংলায় এসে হ'লে বাংলাদেশী
তুমি বাংলার, ভারতের, বিশ্বের বাবরি-কেশী।


তোমায় ক্রোড়ে  নিয়ে বঙ্গমাতা হলো ধন্য
তুমি চুরুলিয়ার দুখুমিয়া, বিশ্বের বিস্ময়, অনন্য।
তুমি জনগণ-মন-বরেন্য কবি রাজাধিরাজ
ক্ষমিও স্বার্থ-লোভী নীতিতে নিঃস্ব বাঙালী সমাজ।


তুমি বিশ্ব-কবি নও, তুমি কবিতার বিশ্ব
বিশ্বের কবিগণ চিরদিন রবে তোমার শিষ্য।


রচনা: ২৫ মে, ২০১৬