##রাজা কবি দুঃখীরামকে ডেকেছিল কবি ও কবিতা কি তা বুঝার জন্যে| দুঃখীরাম প্রথমেই একটা কবিতা শুনাতে চায়| রাজা কবিতার নাম জিজ্ঞেস করলে দুঃখী বলে 'বিরহ', রাজা শোনে 'বিদ্রোহ'| তাই রাজা তাকে শূল-বিদ্ধ করার আদেশ দেয় (২৫/৪/১৬ তারিখের কবিতাটি)| আবার দুঃখী কবির কেন ডাক পড়লো এবং কি হলো দেখা যাক!
===============================


হবুচন্দ্র রাজা আবার পড়লো বিষম ধাঁধায়
এই তো সেদিন বুঝলো তফাৎ ঘোড়া এবং গাধায়।
তবু কেন মনেতে তার হয়না পরিষ্কার
আসল মানে কোনটা হবে কবি ও কবিতার?


গবুচন্দ্র বললো হেসে, এমন কি আর কঠিন?
কবি দুখীর শূলের আদেশ এই তো দিলেন সেদিন।
এখনো সে জেলেই বসে, বললে তারে ডাকি
মরার আগে থাকবে না তার সত্যি কথায় ফাঁকি।


দুখী এলো ধীরে ধীরে হস্ত-পদে শিকল
মাথাটি তার উচ্চ আজো যদিও দেহ বিকল।
রাজার প্রশ্ন শুনে দুঃখী অতি কষ্টে কয়
কইবি থেকে ক'বি এলো যাতে কবি হয়।
কবির মনে বিধাতা দেয় হরেক রকম ভাব
আর মুছে দেয় মন থেকে তার নিজের ক্ষতি-লাভ।
তারপরে কয়, যে ভাব দিলাম তোর মনে আজ গেঁথে
সারা জীবন 'তা' নিয়ে তুই থাকবি কবি মেতে।
'কবি' যখন লিখবি সে 'তা' সেটাই কবিতা
সেদিন থেকে কবি ধরায় লিখছে সবই তা।


মৃত্যু ভয়ে ভাবে মানুষ জীবন অর্থহীন
কবির লেখায় সে জীবন হয় স্বপ্নিল-রঙিন।
মানব আত্মায় সদাই রবে বিমূর্ত এক ক্ষুধা
ধর্ম, প্রেমের ছন্দে সেথায় আনবে কবি সুধা।
ঠিক বেঠিকের যুদ্ধ ধরায় রইবে চিরদিন
ন্যায়ের তরে কবির কণ্ঠ রইবে দ্ব্যর্থহীন।
সত্য কবির কলম লিখবে সত্য-ন্যায়ের তরে
সত্য-মিথ্যার আপোষ হলে কবির আত্মা মরে।
দেহের মরণ সইতে পারে কবি হাসিমুখে
মরলে আত্মা কবির কর্ম ধরায় যাবে চুকে।


হঠাৎ হবু চমকে উঠে, ফের বিদ্রোহ সুর!
মরার আগেও দুখী কবির হয়নি স্বভাব দূর?
কাটলো দুখীর এতটা কাল জেল ও নির্যাতনে
তবুও দেখি বিদ্রোহটা আজও আছে মনে।
এমন কবির গলায় তবে আজকে পড়ুক খাড়া
রাজার রাজ্য শান্ত রবে এমন কবি ছাড়া।
দুখী কবির আর তো কিছুই হলো নাকো বলা
গবুর জল্লাদ এক নিমেষে কাটলো কবির গলা।
তাই তো সেদিন হবু-গবুর হয়নিকো আর শোনা -
প্রতি রক্ত-বিন্দু আনে কবি লক্ষ-জনা।


রচনা: ৮ নভেম্বর, ২০১৬