অস্তমুখী সূর্যের অরুনাভা কাঁদে
শব্দের দুর্ভিক্ষে ব্রহ্মপুত্রের জলে
একটা পরিপূর্ণ কবিতার দুঃস্বপ্ন
ভেসে যায় স্রোতে, সময়ের পলে।
দু'টাকা দামের বাদামগুলো হাতে দিলো
এক সুরমা রংয়ের মেয়ে।
সে কি জানে বাদামের খামটি হাতে
কী খুঁজেছি তার মুখে চেয়ে?

কখনো কি সংঘাত হয় দিন ও রাতের
যখন সূর্য বসে পাটে
যেমন সভ্যতার দর্শন সংঘাতে
আমার আরণ্যক মন একা হাঁটে?
শিকল পরা মনে স্বাধীন শব্দগুলো
কাঁদে পরাধীনতায়
তখন উন্মুক্ত আকাশেও ওড়ে না
মুক্ত বিহঙ্গ আমার কবিতায়।


দারুচিনি, এলাচীর বাগানে স্বপ্নভ্ৰান্ত পথ চলা
একটা কবিতার জন্যে
পঁচা শামুক, ভাঙা ঝিনুকের বিশ্বের বাসিন্দা
আমি - অর্থহীন অরণ্যে।
দুর্গন্ধের নিঃশ্বাসে বেঁচে লিখি কাব্য
আমি কবি, তবু বেকার না
যদি সুশীলতার সৌরভ না আসে তাতে
দায় আমার একার না।


এখন কালে-ভদ্রে বাদামের খোসা ছাড়ানো
জীবনের বিলাসিতা
তবুও হয় না শব্দের খোসা ছাড়ানো
খুঁজে পেতে অন্তঃস্থলে জীবনমুখী কবিতা।
আমি কিছুতেই বুঝতে পারি না
একটা পরিপূর্ণ কবিতা কি
কোন দেশে, কোন কবি, কোনোদিন
সত্যিই লিখেছে তা কি?

"স্যার পয়সা দেবেন না?"
সম্বিৎ ফিরে পেয়ে দেখি সমুখে চেয়ে
একটা পরিপূর্ণ কবিতা -
বাড়ানো হাতে দাঁড়ানো, সুরমা রঙের মেয়ে
একটু পরে এখানে আসবে গহীন অন্ধকার -
তা আসুক
সাজানো শব্দগুলো যদি ভেসে যায় ব্রহ্মপুত্রের জলে
তা ভাসুক।


+++++++++++++++++++++++++++++++
বিঃ:দ্রঃ কাব্য কৌমুদীর দশম কবি, জসীম উদ্দীন মুহম্মদ | কবির কবিতার শিরোনামগুলোঃ সুরমা রঙের মেয়ে ; আমার আরণ্যক মন একলা হাঁটে ; শিকল পরা ; অর্থহীন অরণ্যে ; দায় আমার একার না ; এখন কালে-ভদ্রে ; কিছুতেই বুঝতে পারি না | আমার আজকের অনুশীলন ছিল শিরোনামগুলো অপরিবর্তিতভাবে ব্যবহার করে একটা অর্থপূর্ণ কবিতা লেখা | এই অনুশীলনের মধ্যে দিয়ে জানলাম কবিতার আসরে একটু ব্যতিক্রমী এবং স্বতন্ত্র ধারায় যে কয়েজন কবি কবিতা লেখেন কবি জসীম উদ্দীন মুহম্মদ তাঁদের একজন, যাঁর কবিতা পড়লেই বুঝা যায় সে কবিতার কবি কে| জীবনের বিভিন্ন দুঃখ, অসংকুলান, অসামঞ্জস্য সর্বোপরি সংসার জীবনের সাথে কাব্য চর্চার যে বিভিন্ন সংঘাত তা ব্যতিক্রমী শব্দ বিন্যাস ও উপমায় লিখে থাকেন|| কবির দীর্র্ঘ জীবন, সুস্থতা এবং এই ধারার অসংখ্য কবিতা কামনা করি |